বুধবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৩ ০০:০০ টা
ধর্মতত্ত্ব

বৈদিক সাহিত্য

আর্য যুগকে বৈদিক যুগ বলা হয়। আর্যরা বহুকাল এই দেশে বাস করে একটি উন্নত ধরনের সভ্যতা গড়ে তোলে এবং তা বৈদিক সভ্যতা নামে সুপরিচিত। বেদ হলো আর্যদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ এবং এটা বিশ্ব সাহিত্যে একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে রয়েছে। বেদ শুধু ভারতের আর্যদের প্রাচীন গ্রন্থ বা সাহিত্য নয়, সারা বিশ্বের আর্য জাতিরও এটা প্রাচীনতম গ্রন্থ। বেদ শব্দের মৌলিক অর্থ জ্ঞান এবং এই জ্ঞান বা অভিজ্ঞতাই আর্য সমাজের জীবনধারার আদর্শ বা ভিত্তি। বেদের এক অংশের নাম শ্রুতি। কারণ প্রাচীনকালে পরস্পরের কাছে শুনতে শুনতে এর প্রচার হয়। বেদ সংস্কৃত ভাষায় রচিত। এটা একজনের রচিত নয়; ভিন্ন ভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন ঋষি ও মহাপুরুষদের দ্বারা এটা রচিত হয়েছে। হিন্দুদের বিশ্বাস বেদ নিত্য বেদ অপৌরুষেয় অর্থাৎ বেদের মন্ত্রগুলো মানুষের রচনা নয়; বেদ ঈশ্বরের বাণী। বেদ হতে আর্যদের ধর্ম, সমাজ, দর্শন, আচার-ব্যবহার, রীতি-নীতি প্রভৃতি সম্বন্ধে জানা যায়। বেদ চারভাগে বিভক্ত। যথা-ঋক, সাম, যজুঃ ও অথর্ব। আবার প্রত্যেকটি বেদ সংহিতা, ব্রাহ্মণ, আরণ্যক ও উপনিষদ_ এই চারভাগে বিভক্ত। সংহিতা ভাগ পদ্যে রচিত। দেবতাদের স্তুতিগান নিয়ে সংহিতা রচিত। চারটি বেদের চারটি সংহিতা আছে। এভাবে চারটি বেদের চারটি ব্রাহ্মণ আছে। ব্রাহ্মণ প্রধানত গদ্যে রচিত। এতে যাগযজ্ঞের বিধি বর্ণিত আছে। আরণ্যক ও উপনিষদ এই দুইভাগ পরবর্তী যুগে রচিত হয়। অরণ্যবাসী ঋষি, ব্রাহ্মচারীদের দার্শনিক চিন্তাধারা আরণ্যক ও উপনিষদে স্থান লাভ করেছে। আরণ্যক ভাগে সংসারত্যাগী অরণ্যবাসী সন্ন্যাসীদের উদ্দেশে ধর্মোপদেশ আছে। উপনিষদে ব্রহ্মবিষয়ক অতি গভীর দার্শনিক তত্ত্ব আলোচিত হয়েছে। এটা বৈদিক সাহিত্যের রুত্নবিশেষ। -আবদুল খালেক

সর্বশেষ খবর