মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বদলে যাচ্ছে ইন্টারভিউর ধরন

শামছুল হক রাসেল

বদলে যাচ্ছে ইন্টারভিউর ধরন

সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি এবং বেসরকারি উভয় চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নের ধরনই পাল্টে গেছে। এখন সব চাকরিতেই পাঠ্য বিষয়ের পাশাপাশি প্রয়োজন হয় সাধারণ জ্ঞান, একাধিক ভাষায় দক্ষতা, বিশ্লেষণী ক্ষমতা, প্রত্যুত্পন্নমতিত্ব প্রভৃতি গুণ। তীব্র প্রতিযোগিতার এই বাজারে এসব বিষয়ে নিজের দক্ষতা প্রমাণ না করতে পারলে চাকরির বাজারে নিজেকে গ্রহণযোগ্য প্রার্থী হিসেবে হাজির করা দুঃসাধ্য বটে। আর অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে পরিবর্তনশীল প্রশ্নের ধরনের দিকেও।

নিয়োগ পরীক্ষার ধরন : সরকারি বা বেসরকারি— প্রায় সব চাকরির পরীক্ষায়ই লিখিত ও ভাইভা  দুটি আলাদা পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। আবার লিখিত পরীক্ষায়ও রয়েছে দুটি অংশ- এমসিকিউ ও লিখিত। অনেক প্রতিষ্ঠানে এর বাইরে কাজের প্রয়োজন অনুযায়ী কম্পিউটারে মৌলিক দক্ষতার বিষয়েও পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে।

ইংরেজি : আধুনিক এই বিশ্বে ইংরেজির গুরুত্ব বিষয়ে আলাদা করে বলার কিছু নেই। আর এখনকার সব ধরনের প্রতিষ্ঠানেই প্রচুর পরিমাণ ইংরেজি ব্যবহার করতে হয়। কাজেই এখনকার চাকরির পরীক্ষায় ইংরেজিবিষয়ক জ্ঞানকে আলাদা করে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে যাচাই করা হবে, সেটাই স্বাভাবিক। আগেও পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ইংরেজিকে গুরুত্ব দেওয়া হতো, তবে সময়ের সঙ্গে ইংরেজির জ্ঞান যাচাইয়ের ধরন পাল্টে গেছে। যেমন : আগে ইংরেজি সাহিত্যের প্রতি নজর দেওয়ার একটি প্রবণতা ছিল, যা এখনকার সময়ে তেমন একটা নেই। এর চেয়ে বরং প্রার্থীর ইংরেজি সাবলীলভাবে লিখতে পারার দক্ষতা, ইংরেজি ভোকাবুলারির গভীরতা প্রভৃতি বিষয়েই গুরুত্ব দেওয়া হয়। এখনো প্রশ্নে কম্প্রিহেনসন থাকে। তবে এসব কম্প্রিহেনসনে এখন থাকে সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, পত্রিকার সংবাদ অথবা গুরুত্বপূর্ণ কোনো কলাম। এসবের মাধ্যমে প্রার্থীর বিশ্লেষণী ক্ষমতা এবং নিজস্ব চিন্তাভাবনা প্রকাশের ক্ষমতাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়।

 

 

বুদ্ধিমত্তা যাচাই : চাকরিপ্রার্থীর বুদ্ধিমত্তা যাচাইয়ের জন্য এখন আলাদা করেই প্রশ্ন করা হয়। এসব প্রশ্নে একটি সমস্যাকে উপস্থাপন করা হয়। প্রার্থীকে সেই সমস্যাকে সহজীকরণ করে উদ্ভূত নানা প্রশ্নের জবাব দিতে হয়। ইংরেজিতে যাকে বলে অ্যানালাইটিক্যাল অ্যাবিলিটি বা বিশ্লেষণী ক্ষমতা। যে কোনো পরিস্থিতিকে প্রার্থী কতটা সফলতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে পারে এবং সেই পরিস্থিতি সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারে কিনা, সেটা যাচাই করা হয় এই অংশে। আগের দিনে ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ের মধ্যেই চাকরির পরীক্ষার প্রশ্ন সীমাবদ্ধ থাকলেও এখনকার সময় এই অংশকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানেও এসব প্রশ্ন করা হয়ে থাকে।

পরিবর্তিত মৌখিক পরীক্ষা : এখনকার সময় লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি মৌখিক পরীক্ষায়ও প্রচুর গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই লিখিত পরীক্ষার সাফল্যের পাশাপাশি মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করাটাও এখন আবশ্যক। লিখিত পরীক্ষায় প্রার্থীর জ্ঞানের তাত্ত্বিক পরীক্ষাটি হয়ে গেলেও সার্বিকভাবে একজন প্রার্থী কতটা চটপটে বা কেমন ব্যক্তিত্বশীল তা নির্ধারণ করার জন্য মৌখিক পরীক্ষা কাজ করে। অনেক প্রতিষ্ঠানেই লিখিত পরীক্ষার চেয়ে মৌখিককেই গুরুত্ব দেওয়া হয়।

সহশিক্ষা কার্যক্রম : অনেক প্রতিষ্ঠানেই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম বা এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিস অনেক গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। এটি প্রার্থীর জন্য একটি বাড়তি যোগ্যতা বটে। খেলাধুলা, বিতর্ক, নাচ, গান, অভিনয় বা অন্য যে কোনো ধরনের সহশিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে প্রার্থীর সংশ্লিষ্টতা তার যোগ্যতাকে বাড়িয়ে দিতে সক্ষম। তাই এদিকটায়ও শুরু থেকেই নজর দেওয়া প্রয়োজন চাকরিপ্রার্থীদের।

আত্মবিশ্বাসী উপস্থাপনা : আত্মবিশ্বাস যাচাই করার জন্য মৌখিক পরীক্ষায় বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়। এ ছাড়া নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের ওপর প্রার্থীর উপস্থাপনা কৌশল, বাচনভঙ্গি, শুদ্ধ উচ্চারণ এবং সর্বোপরি মননশীলতা যাচাই করা হয়।

সর্বশেষ খবর