রবিবার, ২২ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

স্কুল পেরিয়ে কলেজ

স্কুল পেরিয়ে কলেজ

সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল। এবার পাসের গড় হার ৮৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। ইতিমধ্যে বেজে ওঠেছে ভর্তি যুদ্ধের দামামা। স্কুল  পেরিয়ে কলেজে পা রাখলে পাওয়া যায় অনেক স্বাধীনতা। কিন্তু মনে রাখতে হবে এই স্বাধীনতা মানে ‘দায়িত্ব’। বিশেষ করে পড়াশোনা ও ভবিষ্যতের কথা ভুললে চলবে না। এ সময়টাই ক্যারিয়ার গড়ার মূল ভিত্তি। লিখেছেন —শামছুল হক রাসেল

 

স্কুল পেরিয়ে কলেজ— এই অনুভূতিটা অনেকের কাছেই গলি থেকে রাজপথ, কিংবা গ্রাম থেকে শহর, এমনকি দেশ থেকে বিদেশে যাওয়ার আনন্দের মতো। নিঃসন্দেহে এটি জীবনের এক বড় সন্ধিক্ষণ। এই পরিবর্তন মোকাবিলা করতে হবে দক্ষ হাতে। এ সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে। অন্যথায় পিছিয়ে পড়তে হবে ক্যারিয়ার দৌড়ে। কলেজে উঠে লেখাপড়ার ধরন এবং পদ্ধতি অনেকটা পাল্টায়। স্কুল জীবনে বিভিন্ন বিষয়ে প্রচুর পাঠ্যবই পাওয়া যায়। সমস্যা হলো, কলেজ লেভেলে বেশির ভাগ কাজ সারতে হয় রেফারেন্স ও লাইব্রেরির বইয়ের মাধ্যমে। এমনকি সহায়তা নিতে হয় বিদেশি কোনো বইয়ের। এ ছাড়া কলেজের বই কেনা খরচ সাপেক্ষ, জোগাড় করাও মুশকিল। তাই, ভর্তি হয়ে লাইব্রেরি যাওয়ার অভ্যাস করা জরুরি। পড়াশোনার পরিধি বাড়াতে চাইলে  নিজস্ব লাইব্রেরি ছাড়াও অন্যান্য লাইব্রেরির মেম্বারশিপ নেওয়া যায়। আর একটা জিনিস খুব কাজে লাগে কলেজ জীবনে। সেটি হলো ইন্টারনেট। দেশ-বিদেশের বহু নামি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের খোঁজ এখান থেকেই পাওয়া যাবে। সে সব সাইটে অনেক নামি-দামি অধ্যাপকদের কাজকর্মের বৃত্তান্ত বা লেকচার নোটস সংগ্রহ করা যায়। স্কুল পেরিয়ে কলেজে পা রাখলে পাওয়া যায় অনেক স্বাধীনতা। কিন্তু সবাইকে মনে রাখতে হবে এই স্বাধীনতা মানে ‘দায়িত্ব’। বিশেষ করে পড়াশোনার, কর্তব্য ও ভবিষ্যতের কথা ভুলে গেলে চলবে না। এ সময়ে নোট নেওয়ার অভ্যাস করতে হবে। ক্লাসে শিক্ষকের লেকচার শুনে ও বুঝে একই সঙ্গে নোট নেওয়াটা বেশ কঠিন কাজ। কিন্তু সেটাই শিক্ষণীয়। এ জন্য প্রয়োজন যত্নসহকারে শিক্ষকের লেকচার খাতায় সংরক্ষণ করা এবং ক্লাস শেষে বন্ধুদের সঙ্গে কাউন্সেলিং করা। যাদের এই বাড়তি দক্ষতা থাকে, তাদের পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার সম্ভাবনা বেশি থাকে। নোট নেওয়ার আরও একটি সুবিধা হলো লেখার স্পিড বাড়ানো যায়। পরীক্ষার সময় যেটা খুব কাজে আসে। কোনো কোনো কলেজে ইউনিফর্ম ছেড়ে নিজের পছন্দমতো পোশাক পরে যাওয়ার আনন্দই আলাদা। তার মানে এই নয়, উগ্র পোশাক পরে যেতে হবে। পোশাকের ক্ষেত্রে এই স্বাধীনতা রুচির সঙ্গে মানিয়ে চলতে হবে। তবে অনেক সময়েই মনে একটা সাহসী ভাব জাগে। বাধা অতিক্রম করার প্রবণতা তৈরি হয়। এটা খেয়াল রাখতে হবে, যে পোশাকই পরা হোক না কেন, সেটা যেন দৃষ্টিকটু না হয়। ভুলে গেলে চলবে না, কলেজও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।  ছাত্রছাত্রীরা যে বয়সে কলেজে প্রবেশ করে সেই সময়ে তাদের গ্রুপিং, দলাদলি বা ইউনিয়নের প্রতি আগ্রহ থাকাই স্বাভাবিক। তবে লেখাপড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় না রেখে এসব কাজকর্মে লিপ্ত হলে উল্টো লেখাপড়ার মূল কাজটাই ব্যাহত হয়। একটি কথা মনে রাখা দরকার, কলেজে ওঠে অনেক কিছুতেই স্বাধীনতা পাওয়া যায়। কিন্তু তার অপব্যবহার করলে নিজেরই ক্ষতি। প্রথম থেকেই মনে রাখতে হবে, স্বাধীনতা মানে দায়িত্ব, নিজের প্রতি কর্তব্য পালন। নিজের ভবিষ্যত্ ও ক্যারিয়ারের লক্ষ্য ঠিক করার প্লাটফর্ম হলো এই কলেজ জীবন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর