শুক্রবার, ১৭ মে, ২০১৩ ০০:০০ টা

'একতরফা নির্বাচনে গিয়ে পার পাওয়া যায় না'

'একতরফা নির্বাচনে গিয়ে পার পাওয়া যায় না'
সমঝোতা হতেই হবে। সেটা সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতা, নাকি আওয়ামী লীগ নিজে পঞ্চদশ সংশোধনী পরিবর্তন করবে তারাই ভালো জানেন। একতরফা নির্বাচনে গিয়ে বাংলাদেশে পার পাওয়া যায় না_ এটা না বোঝার কিছু নেই। যে কোনো রাষ্ট্রের মধ্যে অস্থিরতা বাড়াতে খুব বেশি মানুষ দরকার হয় না। মিডিয়া, দেশি ও আন্তর্জাতিক মহলেরও ব্যাপক চাপ আছে। তাই একতরফা চিন্তা থেকে যত তাড়াতাড়ি সরে দাঁড়াতে পারবে ততই মঙ্গল। গত বুধবার চ্যানেল আই'র টকশো 'আজকের সংবাদপত্র'-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এ কথা বলেন। মতিউর রহমান চৌধুরীর উপস্থাপনায় তিনি বলেন, পাকিস্তানের মতো অস্থির দেশেও কেয়ারটেকারের মাধ্যমে একটা সফল নির্বাচন হলো, সব দল মেনে নিল সেখানে। আমরা বলতে গেলে দুর্ভাগা। অথচ আজকের প্রধানমন্ত্রীই এ ধারণা প্রবর্তনের অন্যতম রূপকার। সরকার মনে করছে, শক্তি দিয়ে সব জয় করা যাবে। যখনই পুলিশ বাহিনী নিয়ে মনে করা হয় আমি জিতেছি, সেটা আসলে জেতা হয় না। এতে সংকট কাটবে না। সংঘর্ষ আরও বাড়বে। সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া গণতন্ত্রে নির্বাচন হয় না_ এটা রাজনীতিবিদদের না বোঝার কথা নয়। অযথাই মানুষের ভোগান্তি বাড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, সব দেশে যে হঠাৎ করে একদিনে গণতন্ত্র এসেছে তা নয়। আমাদের সিভিল সোসাইটি, মিডিয়া অলরেডি প্রেসার দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক প্রেসারও বাড়ছে। সমাধান হবেই। ড. ইমতিয়াজ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এত ভালো করছিল যে, অনেক দেশই আমাদেরকে মডেল হিসেবে নিয়েছিল। রাজনৈতিক কারণে আজ তা থমকে গেছে। দ্রুত এ থেকে উত্তরণ দরকার। সরকারকে সে ব্যবস্থা করতে হবে। শাসক দল যদি মনে করে তাদের জেতার সম্ভাবনা কম, তাহলে তারা এখন সমঝোতায় রাজি নাও থাকতে পারে। হয়তো তারা এখন ক্ষমতা দেখানোর চেষ্টা করছে কিন্তু নির্বাচনের দিনটা যখন ঠিক হবে, খুঁটিটা যখন নড়তে শুরু করবে তখন মনে করবে আমাকে প্রতিটি ব্যক্তির কাছে যেতে হবে। কিন্তু ১০ বছর আগের চেয়ে বর্তমানে মানুষ অনেক সচেতন। তাই এ পরিস্থিতির সমাধান হবে। মাঝখানে কিছু দিন একটু কষ্টের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। তিনি বলেন, মিডিয়া, দেশি ও আন্তর্জাতিক মহলের যে চাপ আছে তাতে সমঝোতায় না গিয়ে উপায় নেই। সেটা ছয়-সাত মাস আগে করলে শাসক দলেরই লাভ হতো। বাকি সময়টা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকতে পারত। এখন মনে হচ্ছে, এটাকে টেনে নিয়ে একেবারে শেষ সময়ে যখন হাজারো প্রেসার পড়বে তখন করবে। এতে তারা কতটুকু লাভবান হবে বলা মুশকিল। তিনি বলেন, যারা ক্ষমতায় আছেন তাদের বেশির ভাগেরই ছেলেমেয়ে বিদেশে লেখাপড়া করেন। তারা ঢাকা, চট্টগ্রাম বা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন না। তাই হরতাল বা রাজনৈতিক ডামাডোলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলে তাদের কিছু আসে যায় না। অনেকের একাধিক দেশের পাসপোর্টও রয়েছে। বাংলাদেশকে এক প্রকার ছেড়েই দিয়েছেন তারা। পরিবারও বিদেশে থাকেন। বিদেশে সুবিধা করতে না পেরে ঘুরেফিরে বাংলাদেশে এসে মন্ত্রী-উপদেষ্টা হন। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতায় এসব নেতা খুব বেশি বিচলিত হন না। ছেলেমেয়ে, পরিবার সবাই যদি বিদেশে থাকে তাহলে এমনিতেই দেশের প্রতি আনুগত্য কম থাকবে। এ জন্য আমার মনে হয় কতগুলো নিয়ম করা উচিত। আগামীতে যারা নমিনেশন পাবেন তারা যেন এক পাসপোর্টধারী হন এবং সেটা যেন বাংলাদেশের পাসপোর্ট হয়। এমনকি তাদের ছেলেমেয়েদের নাগরিকত্বও দেখা দরকার। মিডিয়ার উচিত এগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর