শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৩ ০০:০০ টা

সংবিধানে নিষিদ্ধ করলেই সেনাশাসন বন্ধ হয় না

সংবিধানে নিষিদ্ধ করলেই সেনাশাসন বন্ধ হয় না

তত্ত্বাবধায়কের জন্য সেনাশাসন এসেছিল এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। দুই বড় রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতেই ওয়ান-ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক বা পরবর্তীতে সেনাশাসন এসেছিল। পাকিস্তান আমলে বা বাংলাদেশ সৃষ্টির পর বহুবার সেনাশাসন এসেছে। তখন কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক লাগেনি। সেনাশাসন সরকারের কথা অনুযায়ীও আসে না। আবার সংবিধানে নিষিদ্ধ করলেই সেনাশাসন বন্ধ হয় না। বুধবার বাংলাভিশনের টকশো 'নিউজ অ্যান্ড ভিউজ'- এ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টা মঞ্জুরুল আহসান খান এসব কথা বলেন। গোলাম মোর্তোজার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সংবিধানে সংশোধনী এনে উনি বলেছিলেন আর কোনোদিন ওয়ান-ইলেভেন আসার সুযোগ নেই। তারপরও এখন কেন ওয়ান-ইলেভেন আসার কথা বলছেন? উনার দলের অনেকেই বলছেন। তাহলে সংবিধান সংশোধন করে লাভ হলো কী? বিপদ তো থেকেই যাচ্ছে। এ বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার একটাই পথ- রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার মানসিকতা তৈরি করা। প্রধানমন্ত্রী বললেন সংবিধান থেকে একচুলও নড়বেন না। সংবিধানের ভেতরে সংশোধনীর সুযোগ কেন রাখা হয়েছে? এটা তো চিরকাল স্থায়ী থাকার বিষয় নয়। সংবিধান তো বাস্তবসম্মত হতে হবে। তিনি বলেন, এখন আর জনস্বার্থে সংবিধান সংশোধন হয় না। কেউ রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে এটা সংশোধন করে। কেউ একই কারণে এটাকে অপরিবর্তিত রাখতে চায়। রাজনীতিতে বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে প্রবীণ এ রাজনীতিবিদ বলেন, আমাদের এখানে বিদেশি হস্তক্ষেপ শুধু নির্বাচনের বিষয় নয়, বিভিন্ন কারণে হস্তক্ষেপগুলো হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক যে, তাদের হস্তক্ষেপ করতে হয়। আমাদের সমস্যা আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব আলোচনা করে ঠিক করবে এটাই নিয়ম। কিন্তু, সেটা কখনো হয় না। আলোচনার দায়িত্ব কার? সঞ্চালকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধান দায়িত্ব সরকারের। সরকারই তো সমস্যাটা সৃষ্টি করেছে। একটা জাতীয় সমঝোতার ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা হয়েছিল। সরকার অযাচিতভাবে সংবিধান সংশোধন করে এটা বাতিল করে দিয়েছে। কোনো ধরনের আলোচনা নেই, কারও দাবি ছিল না, সরকারি দল থেকেও কেউ বলেনি অথচ এটা বাতিল করে দিল। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা আলোচনার জন্য প্রস্তুত। এখন সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। শুধু আওয়ামী লীগ-বিএনপি নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা দরকার। সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্বের অন্য গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানান। আমাদের এখানে সেই সংস্কৃতিই গড়ে ওঠেনি। এখানে এখনো সেই পাকিস্তানি ভূত অর্থাৎ ক্ষমতা দখল করতে হবে আর এটা কখনো ছাড়া যাবে না_ এ নীতিতেই রাজনীতি চলছে। অনেক সময় পরাজয়ও বিজয়ের চেয়ে সম্মানজনক হতে পারে। নিজেকে সংশোধন করার সুযোগ তৈরি হয়।

আওয়ামী লীগ সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে যদি সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারত তাহলে দেশের জন্যও ভালো হতো, তাদের দলের জন্যও ভালো হতো। তা না করে নির্বাচন নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে।

 

 

সর্বশেষ খবর