রবিবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্রচারণায় ব্যস্ত মেয়র প্রার্থীরা

প্রচারণায় ব্যস্ত মেয়র প্রার্থীরা

আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর বাইরে অন্যান্য দলের সমর্থিত প্রার্থীরাও বসে নেই। গতকাল জাতীয় পার্টি, বিকল্পধারা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও গণসংগতি আন্দোলনের সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা দিনভর ব্যস্ত ছিলেন প্রচারণায়। নানান প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্বপ্নের রাজধানীর গড়ার। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন তিন নেতার মাজার সংলগ্ন মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় করে  নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে বংশাল, নাজিরাবাজার, বিডিআর সিনেমা হল, গণকটুলী, বিডিআর ৫ নম্বর গেট, রায়েরবাজার, হাজারীবাগ পার্ক এলাকার বিভিন্ন বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান ও আবাসিক এলাকায় মেয়র পদে সোফা প্রতীকের পক্ষে গণসংযোগ করেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবলু উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টর থেকে নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে রাজধানীর দক্ষিণখান, মিরপুরের কালশী, ভাসানটেক দেওয়ানপাড়া নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান ও আবাসিক এলাকায় মেয়র পদে চরকা প্রতীকের পক্ষে গণসংযোগ করেন। ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র প্রার্থী মো. জোনায়েদ আবদুর রহিম সাকি (জোনায়েদ সাকি) মিরপুর, মোহাম্মদপুর, বাড্ডা ও উত্তরায় গণসংযোগ করেন। এ ছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাবে তার ইশতেহার ঘোষণা ও প্রার্থী পরিচিতি সভা অনুষ্ঠান হয়। পরিবর্তন সম্ভব, পরিবর্তন চাই স্লোগান সামনে রেখে নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেন জোনায়েদ সাকি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম চরমোনাই পীরের সমর্থিত দক্ষিণ সিটির মেয়র প্রার্থী আলহাজ আবদুর রহমান গতকাল রাজধানীর মুগদা থানার সামনে থেকে মুগদার বিভিন্ন এলাকায় তার নির্বাচনী প্রতীক চায়ের ফ্লাস্কের পক্ষে ব্যাপক গণসংযোগ পরিচালনা করেন। এ সময় তিনি নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির দাবি জানান। উত্তর ঢাকা সিটির মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে বারী মাসউদ রামপুরা, উত্তর বাড্ডা, মধ্য বাড্ডা ও মেরুলসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। নির্বাচিত হলে নগরজীবনে স্বস্তি আনয়ন ও নাগরিক সেবা সবাইকে পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। এ সময় ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক মাওলানা এ টি এম হেমায়েত উদ্দিন ও মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী সঙ্গে ছিলেন। ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র প্রার্থী মাহী বি চৌধুরী খিলক্ষেত, তালেরটেক নামাপাড়ায় গণসংযোগ করেন এবং উত্তর সিটি করপোরেশনকে প্রজন্ম শহর হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তাকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। এ ছাড়াও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রপ্রার্থী মো. জোনায়েদ আবদুর রহিম সাকি (জোনায়েদ সাকি) বলেছেন, ঢাকাবাসীর আকাক্সক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতেই সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া। দুর্নীতিমুক্ত এবং জনগণের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে নগর প্রশাসন পরিচালনাই হবে আমাদের মূলনীতি। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘ইশতেহার ঘোষণা ও প্রার্থী পরিচিতি’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
পরিবর্তন সম্ভব, পরিবর্তন চাই স্লোগানকে সামনে রেখে নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেন জোনায়েদ সাকি। ইশতেহারে তিনি উল্লেখ করেন, আমরা নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। নাগরিকতার প্রাথমিক শর্তই হলো নাগরিক মর্যাদা। স্থানীয় সরকারগুলো প্রায় সম্পূর্ণ অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। জনগণের মতামত গ্রহণ না করেই সরকার নগরকে দ্বিখণ্ডিত করেছে। ঐক্যবদ্ধ ও সুসমন্বিত কর্তৃপক্ষ ছাড়া ঢাকাকে বাসযোগ্য করা ও সব পরিসেবা প্রদান করা অসম্ভব। আমরা সেবাপ্রদানকারী সংস্থাগুলোকে সমন্বিত করে স্বশাসিত নগর সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তরুণ জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদনশীলতার সর্বোচ্চ বিকাশের অনুকূল পরিবেশ ঢাকা নগরে গড়ে তুলতে চাই। নগরীকে ওয়াই-ফাই প্রযুক্তির আওতায় এনে সবার জন্য ন্যূনতম ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। ঢাকাকে নারীদের জন্য নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ একটি নগরে রূপান্তরিত করতে চাই। আগামীর ঢাকা গড়া আমাদের লক্ষ্য, তাই শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশ হবে আমাদের প্রধান কর্মসূচি। প্রতিটি শিশুর জন্য পর্যাপ্ত খেলার মাঠ ও বিনোদনের ব্যবস্থা করা হবে আমাদের নগর সরকারের অগ্রাধিকার কর্মসূচি। নির্বাচনের সময় ট্যানারি সরিয়ে নেওয়ার হাঁকডাক দেওয়া হয়, কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না। জনগণের আশঙ্কা, ট্যানারি শিল্পের জন্য বিকল্প স্থান সাভারে নির্দিষ্ট করা হলেও কোনো স্বার্থসংশ্লিষ্টতার কারণে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। নগরীর প্রকৃতি পরিবেশ রক্ষায় কঠোর ভূমিকা গ্রহণ করব। রাজধানীর নদীগুলোর অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে প্রবাহ যথাযথ করা হবে। অধ্যাপক আহমেদ কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম, অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন, অধ্যাপক সামিয়া হক ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ। উল্লেখ্য, জোনায়েদ সাকি বর্তমানে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সর্বশেষ খবর