বুধবার, ৬ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা
মিয়ানমারের সঙ্গে বৈঠক

ইয়াবা ল্যাবের তালিকা দিয়ে সহায়তা চাইল বাংলাদেশ

বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষে মিয়ানমারে ৩৯টি ল্যাবরেটরিতে (কারখানা) তৈরি হচ্ছে ইয়াবা। দুর্গম কিছু এলাকায় চাষ হচ্ছে পপি ও গাঁজা। শুধু বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যেই এসব মাদকদ্রব্য উৎপাদন করা হচ্ছে। গতকাল বাংলাদেশ সফররত মিয়ানমার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থার প্রতিনিধিদের এমন তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ। সকালে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে শুরু হওয়া দুই দেশের মধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত দ্বিতীয় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থার প্রতিনিধিরা মিয়ানমার প্রতিনিধিদের তথ্য দিয়ে সহায়তা চেয়েছেন। ৩৯টি ইয়াবা ল্যাবরেটরির তালিকা দিয়ে সেগুলো বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। বৈঠকে পপি ও গাঁজার চাষ এবং রাসায়নিক দ্রব্য পাচারের বিষয়েও তথ্যবিনিময় হয়েছে। ইয়াবাসহ অন্য মাদকদ্রব্যের পাচার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা। বৈঠকসংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (ডিএনসি) মহাপরিচালক (ডিজি) মো. বজলুর রহমান গতকাল বলেন, 'আমাদের বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ হচ্ছে। পারস্পরিক তথ্যবিনিময়ের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ করাই আমাদের উদ্দেশ্য। আগামীকাল (আজ) যৌথ ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরের পর আপনাদের এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।'

গতকাল সকাল ১০টায় হোটেল সোনারগাঁওয়ের দ্বিতীয় তলায় মেঘনা হলে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিতীয় দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরু হয়। এতে মিয়ানমারের চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় কমিটির (সিসিডিএসি) প্রধান পুলিশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল চিউ হুইন। বাংলাদেশের দলটিতে ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শফিকুর রহমান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রতিনিধি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), কোস্টগার্ড, র্যাব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিসহ ডিএনসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সূত্র জানায়, বৈঠকে ইয়াবা, পপি, গাঁজা এবং ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক দ্রব্য পাচারের নানা কৌশল নিয়ে কথা বলেন বক্তারা। এ সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ৩৯টি ইয়ারা তৈরির কারখানা বা ল্যাবরেটরির নাম-ঠিকানা হস্তান্তর করে এগুলো ধ্বংস করার অনুরোধ জানানো হয়। বৈঠকে বলা হয়- মিয়ানমরের ২৩১ কিলোমিটার সীমান্তের কিছু দুর্গম এলাকায় গোপনে পপি ও গাঁজার চাষ হচ্ছে। উৎপাদনের পর এসব মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে পাচার করা হচ্ছে। মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্ত ব্যবহার করে মাদকদ্রব্য চোরাচালান বন্ধে সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেন। জানা গেছে, আজ আলোচনা ও কয়েকটি আনুষ্ঠানিকতা শেষে ডিএনসির প্রধান কার্যালয়ে যৌথ ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর হবে। সন্ধ্যা ৬টায় ওই অনুষ্ঠান শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর