বুধবার, ১৭ জুন, ২০১৫ ০০:০০ টা

হুমকিতে আবাসনশিল্পের সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ

সহযোগী ২৬৯টি শিল্পে অস্থিরতা

আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কমানো ও অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগসহ বেশ কিছু সুবিধা প্রদানের পরও ক্রেতা নেই। প্রণোদনার আশ্বাসেও বাজার চাঙ্গা না হওয়ায় হতাশ আবাসনশিল্পের উদ্যোক্তারা। বাজেট ঘোষণার পর সদ্য সমাপ্ত রিহ্যাবের আবাসন মেলায় ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে কম। এতে চরম হতাশ আবাসন খাত সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, দেশের অর্থনীতিতে আলো ছড়ানো এই আবাসনশিল্প এখন ডুবছে নানা সংকটে। উচ্চ সুদের ব্যাংকঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। সহজ শর্তে স্বল্প সুদে ঋণ না পাওয়ায় ক্রেতাদের আগ্রহ কম। জমির রেজিস্ট্রেশন ব্যয় বেশি হওয়ায় বাড়ছে হতাশা। আবাসনের সহযোগী বা লিঙ্কেজ ২৬৯টি শিল্পেও ছড়িয়ে পড়েছে অস্থিরতা। সব মিলিয়ে দেশের আবাসন ব্যবসার অবস্থা নাজুক।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকসের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আবাসন খাত নিয়ে একটা সমন্বিত প্রক্রিয়া দরকার। ব্যাংকঋণের সুদ কমাতে সমন্বিত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সংশ্লিষ্ট সবার ভূমিকা নিয়ে একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে। কেননা এভাবে আবাসন খাত চলতে পারে না। এ খাতের বিকাশ হলে অর্থনীতির অবস্থা ভালো হবে।

রিহ্যাব তথ্যমতে, দেশে এখন আবাসন প্রতিষ্ঠানের ১২ হাজার ১৮৫টি ফ্ল্যাট অবিক্রীত রয়েছে। এসব ফ্ল্যাটের আনুমানিক বাজারমূল্য ৮ হাজার ৮১১ কোটি টাকা। এ খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি।

রিহ্যাবের ঊধর্্বতন সহসভাপতি মোহাম্মদ লিয়াকত আলী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ব্যাংকিং খাতের অসহযোগিতাই আবাসন খাতের প্রধান সংকট। এ খাতে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকি না থাকলেও ব্যাংকগুলো ঋণ দেয় না। দেশের স্বল্প আয়ের মানুষদের সিঙ্গেল ডিজিট হারে ঋণ দেওয়া হলে আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়াবে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আবাসনশিল্পের বর্তমান সংকট দূর করতে হলে সরকারের দিক থেকে বেশ কিছু নীতিগত ও আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো-অর্থায়ন সংকট কাটাতে ব্যাংকঋণের সুদের হার অবশ্যই যৌক্তিকভাবে সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে হবে, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংককে উদ্যোগী হয়ে সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দিতে হবে; অতিরিক্ত সুদ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অযৌক্তিক ও অতিরিক্ত চার্জ দূর করতে হবে; সুদহারের পাশাপাশি ঋণ পরিশোধের সময়কাল বা মেয়াদ যৌক্তিক করতে হবে; মাসিক কিস্তি মধ্যবিত্ত ও নির্ধারিত আয়ের মানুষের জন্য সহনীয় পর্যায়ে আনতে হবে; আবাসন খাতে অর্থায়ন সমস্যা দূর করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনরর্থায়ন তহবিলটি পুনরায় চালু করা জরুরি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর