শিরোনাম
বুধবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বরিশাল আওয়ামী লীগে কমিটি নিয়ে স্নায়ুচাপে পদপ্রত্যাশীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশাল আওয়ামী লীগে কমিটি নিয়ে স্নায়ুচাপে পদপ্রত্যাশীরা

বরিশাল মহানগরীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় নেতা হওয়ার প্রতিযোগিতায় দৌড়ে অনেকেই। গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে সিনিয়র থেকে শুরু করে যুবলীগের উঠতি নেতারাও যারপর নাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় বহু ধারায় বিভক্ত আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মীরা। প্রয়াত সভাপতি ও সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণের গোছানো মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিচ্ছৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজালুল করিমের। সংশ্লিষ্টদের মতে, হিরণের জীবদ্দশায় মহানগর আওয়ামী লীগ এক এবং ঐক্যবদ্ধ থাকলেও ২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল তার মৃত্যুর পর সংগঠনটি খেই হারিয়ে ফেলেছে। হিরণের মৃত্যুর পর তার অনুগত অনেক নেতাই ভিড়েন দলীয় প্রতিপক্ষ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ছায়াতলে। দীর্ঘ দিনেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ না করায় নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় সংঘাত- সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে স্থানীয় ক্ষমতাসীনদের মধ্যে। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা হিরণের শূন্যস্থান পূরণ করে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করবেন, নাকি নতুনভাবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করবেন তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। কেউ কেউ বলছেন ২০১৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে শওকত হোসেন হিরণ সভাপতি ও আফজালুল করিমকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত বরিশাল মহানগর কমিটি বিলুপ্ত করা হতে পারে। এরপর নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় কমিটি। আবার কেউ বলছেন, দলের জাতীয় সম্মেলনের আগেই মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে। বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম বলেন, ২০১৩ সালের সম্মেলনের পর মহানগরীর একটি প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে জমা দেওয়া হয়েছে। সভাপতি হিরণের মৃত্যুর পর তার সহধর্মিণী সদর আসনের এমপি জেবুন্নেছা আফরোজকে সভাপতির জায়গায় অন্তর্ভুক্ত করে প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি পুনরায় কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এই কমিটিই অনুমোদন পাবে বলে আশা আফজালুল করিমের। এদিকে, মহানগর আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সভাপতির স্থলে কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমকে অন্তর্ভুক্ত করে কেন্দ্রে জমা দেওয়া কমিটি অনুমোদন দেওয়া হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতা। এ ক্ষেত্রে বাদ পড়তে পারেন সভাপতি পদের দাবিদার জেবুন্নেছা আফরোজ এমপি ও সাধারণ সম্পাদকের পদপ্রত্যাশী সাদিক আবদুল্লাহ। সাবেক সেনা কর্মকর্তা জাহিদ ফারুক শামীম বলেন, কমিটি গঠন-পুনর্গঠনের বিষয়টি নির্ভর করছে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার ওপর। তিনি যাকে যে পদে যোগ্য মনে করবেন, তাদেরই মহানগরীর দায়িত্ব দেবেন। এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা এক ওয়ার্ড কাউন্সিলর জানান, হিরণের মৃত্যুর পর সাদিক আবদুল্লাহ মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একটি অবস্থান তৈরি করেছেন। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পদের আরও কয়েকজন জোর দাবিদার রয়েছেন। তাই স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল জাহিদ ফারুক শামীমকে আহ্বায়ক ও জেবুন্নেছা আফরোজ এমপি, আফজালুল করিম, সাবেক এসপি মাহবুবউদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর এবং কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা সাদিক আবদুল্লাহকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে নভেম্বরেই আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা হতে পারে। তবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি বলেন, ডিসেম্বরে দলের জাতীয় সম্মেলনের আগেই বরিশাল মহানগরসহ সব ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে। মহানগর আওয়ামী লীগে সম্ভাব্য কে বা কারা নেতৃত্বে আসছেন জানতে চাইলে নাসিম বলেন, যারা যোগ্য, কমিটেড, দুঃসময়ে দলের হাল ধরতে পারবে, যাদের গণভিত্তি আছে তাদের হাতেই বরিশাল মহানগর আওয়াম লীগের নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হবে। পুরো প্রক্রিয়াটি ডিসেম্বরে জাতীয় সম্মেলনের আগে সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি।

 

সর্বশেষ খবর