শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

উত্তরপত্র মূল্যায়ন সম্মানীর চেক নিয়ে ভোগান্তি

বেশিরভাগ চেকে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

এইচএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন সম্মানীর চেক নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের তালিকাভুক্ত পরীক্ষকরা। ফল প্রকাশের তিন মাসের মধ্যে সম্মানীর চেক দেওয়ার বিধান থাকলেও তা পাঠানো হয় দেড় বছর পর। সেই চেকে আবার নেই বোর্ড চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর। এই চেক ব্যাংকও জমা নিচ্ছে না। ফলে বিপাকে পড়েছেন পরীক্ষকরা। বোর্ডে গিয়ে চেকে স্বাক্ষর করিয়ে আনতে হচ্ছে শিক্ষকদের। পরীক্ষকদের অভিযোগ প্রতিবছরই এমন হয়রানি করা হয়। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বোর্ড কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেও ভোগান্তির সুরাহা হয়নি। বোর্ড কর্তৃপক্ষের এ ধরনের হয়রানি ও ভোগান্তি থেকে মুক্তি চান পরীক্ষকরা। জানতে চাইলে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের সচিব আমিনুল হক সরকার অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কম্পিউটার সেল রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে। তারা তাদের কাজ শেষ করার পর দিনাজপুর বোর্ডের কাজ করেন। ফলে উত্তরপত্র মূল্যায়ন সম্মানীর চেক পাঠাতে বিলম্ব হয়। আর চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ছাড়া চেক পাঠানোর কারণে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে শোকজ করা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে জবাব পাওয়া যাবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমেদ হোসেন বলেন, আমার স্বাক্ষর ছাড়া চেক পাঠানোর বিষয়টি দুঃখজনক। পরীক্ষকদের ভোগান্তি দূর করতে অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এইচএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন করার জন্য চার হাজারের বেশি পরীক্ষক রয়েছেন। প্রতিটি উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য সম্মানী দেওয়া হয় ২৫ টাকা। পরীক্ষার ফল প্রকাশের তিন মাসের মধ্যে উত্তরপত্র মূল্যায়ন সম্মানীর চেক পাঠানোর বিধান। কিন্তু দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে এই বিধানের বালাই নেই। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন সম্মানীর চেক দেওয়া হচ্ছে চলতি বছরের অক্টোবর থেকে। এরই মধ্যে ২০১৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন শেষে ফল প্রকাশিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত দুই হাজার পরীক্ষক উত্তরপত্র মূল্যায়নের সম্মানী পাননি। তবে রংপুরে ৪৫০ জন পরীক্ষকের মধ্যে ২২০ জন মূল্যায়ন সম্মানীর চেক পেয়েছেন। এর মধ্যে ১৫০ জনের কাছে পাঠানো চেকে বোর্ড চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নেই।

রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সোহেল খন্দকার অভিযোগ করেন, তিনি ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার যুক্তিবিদ্যা বিষয়ের উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য ৬ হাজার ৬০০ টাকার চেক পেয়েছেন চলতি বছরের ১৫ নভেম্বর। চেকে বোর্ড চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর না থাকায় তা ব্যাংক জমা নেয়নি। পরে বোর্ডে গিয়ে চেকে স্বাক্ষর নিয়ে আনেন। বোর্ড যাওয়া-আসায় খরচ হয়েছে এক হাজার টাকা। একই অভিযোগ করেন ওই কলেজের আরেক সহকারী অধ্যাপক সোহরাব দুলাল ও রংপুর ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক মুজিবুল হক। বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস) রংপুর জেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল ওয়াহেদ মিয়া জানান, উত্তরপত্র মূল্যায়ন সম্মানীর চেক নিয়ে হয়রানি ও ভোগান্তি দীর্ঘদিনের। সমিতির পক্ষ থেকে তা নিরসনের বিষয়ে একাধিকবার বোর্ড চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। বারবার আশ্বাস দিলেও ফল শূন্য।

সর্বশেষ খবর