বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

পারিবারিক নির্যাতনের নির্মম শিকার নারী

নারী নির্যাতন বিলোপ দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে নৃশংস কায়দায় নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মাধ্যমে গৃহবধূকে বীভৎসভাবে নির্যাতন করার ঘটনা উদ্বেগজনকহারে বেড়েছে। যৌতুক, সন্দেহ, পারিবারিক কলহ ও সামান্য তর্ক থেকেই এখন স্ত্রীদের ওপর নির্মম অত্যাচার চালানো হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজে প্রচলিত পারিবারিক নির্যাতন তথা স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে নির্যাতন আগে যেমন ছিল তা এখনো আছে। তবে নির্যাতনের ধরনে পরিবর্তন লক্ষণীয়। তাদের মতে, অত্যাচারে আগের চেয়ে নৃশংসতা বেড়েছে এবং গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে নারীদের নির্যাতনের ঘটনাও বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের মতে, দেশে নারী নির্যাতন দমনে পর্যাপ্ত আইন থাকলেও শুধু আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর এ ব্যাপারে আন্তরিকতার অভাবে পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় আজ সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন বিলোপ বা নির্মূল দিবস।

গাজীপুরের টঙ্গীতে গত ৫ নভেম্বর পারিবারিক কলহের জেরে এক স্বামী তার স্ত্রীর চোখ উপড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে সেই গৃহবধূর বাম চোখ ও মুখমণ্ডলে গুরুতর জখম হয়। ঘটনার পর থেকেই স্বামী পলাতক আছেন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের জরিপ বলছে, ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন মোট ২৯২ জন নারী। এর মধ্যে ১৬৭ জন নারী স্বামীর নির্যাতনের কারণে মারা যান। এ ছাড়া গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪৮৮ জন নারী পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ সময় স্বামী হত্যা করেছেন ২৬২ জন স্ত্রীকে।  বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (২০০০) সংশোধিত (২০০৩) আইনে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নির্যাতিত নারীরা যৌতুকের শিকার হয়ে মামলা করেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে মামলাগুলো দুর্বল হয়ে যাওয়ায় আসামিরা সহজে পার পেয়ে যান।

বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, দেশে নারী নির্যাতন দমনে কঠোর ও নমনীয় উভয় ধরনের আইন বিদ্যমান। কিন্তু আইন থাকার পরও অপরাধ কমছে না। এ জন্য তিনি মানুষের নারীকে ‘পণ্য’ ভাবার মানসিকতাকে দায়ী করেন।

সর্বশেষ খবর