মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

শতাধিক স্পট থেকে কোটি টাকা মাসোহারা আদায়

ডিবি পুলিশের নামে চাঁদাবাজি

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরজুড়ে চলছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) নামে ‘ওপেন সিক্রেট’ চাঁদাবাজি। নগরীর পাঁচ শতাধিক মাদক স্পট, অবৈধ হোটেল ব্যবসা, চোরাকারবারিসহ বিভিন্ন অপরাধ স্পট থেকে প্রতি মাসে আদায় করা হয় কোটি টাকা। অভিযোগ রয়েছে— গোয়েন্দা পুলিশের নামে অবৈধ এ চাঁদাবাজিতে জড়িত রয়েছেন কয়েকজন কর্মকর্তা ও কথিত ক্যাশিয়ার। কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহযোগিতায় ডিবি পুলিশের কথিত এ ‘ক্যাশিয়াররা’ হয়ে ওঠেছেন অপ্রতিরোধ্য। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কশিনার কুসুম দেওয়ান বলেন, ‘ডিবি’র নামে মাসোহারা গ্রহণ করা হয় এ ধরনের তথ্য আমার জানা নেই। যদি এ ধরনের কাজ কেউ করে থাকে তা হলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।’

অনুসন্ধানে জানা যায়, ডিবি পুলিশের নামে নগরীর কয়েক শতাধিক অপরাধ স্পট থেকে মাসোহারা আদায় করা হয়। তার মধ্যে রয়েছে পাঁচ শতাধিক মাদক স্পট, অনৈতিক কর্মকাণ্ড হয় এমন আবাসিক হোটেল ও গেস্ট হাউস, ম্যাসাজ পার্লার, জুয়ার আসর, পাসপোর্টের দালাল, অবৈধ পলিথিন ব্যবসায়ী, ফুটপাথের অবৈধ হকার, অনুমোদিত খাদ্যদ্রব্য তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান, রেলের মাদক ব্যবসায়ী, জাল টাকার কারবারি, ভেজাল পণ্য ব্যবসায়ী, হুন্ডি ব্যবসায়ী, সোনা চোরাচালান, কাঠ পাচারসহ বিভিন্ন অবৈধ চোরাচালানিরা। ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাশিয়াররা’ স্পটের রকম ভেদে সাধারণত মাসিক ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করে। ডিবি পুলিশের এ চাঁদাবাজির নেতৃত্ব দেন পুলিশের সাবেক এক সদস্য। চাঁদাবাজির সুবিধার্থে তিনি নগরীকে তিন ভাগে বিভক্ত করে তিনজনকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এর মধ্যে কোতোয়ালি জোনের চাঁদা তোলার দায়িত্ব দিয়েছেন মাসুদকে, পাঁচলাইশ  জোনে মোস্তাফা এবং ডবলমুরিং জোনে দিলদারকে। এ ছাড়া তাদের সহযোগী হিসেবে রয়েছে পুলিশ সদস্য রউফ, মিজান, মোল্লা, এরশাদ উল্লাহ, হাসেম, কামাল এবং সিদ্দিক। তাদের এ চাঁদাবাজির তত্ত্বাবধান করেন গোয়েন্দা পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা। এ চক্রের নেতা নিজেকে ডিবি পুলিশের ক্যাশিয়ার পরিচয় দেন। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আগের চেয়ে অনেক কঠোর। তাই ডিবির নামে আগের মতো কারও কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করা হয় না।’ তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী জানান, ‘গত কয়েক বছর ধরেই ডিবিকে মাসোহারা দিতে হয়। না দিলে ক্যাশিয়াররা ডিস্টার্ব করেন।’

সর্বশেষ খবর