মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইবির রেস্ট হাউসে ঠাঁই হয় না শিক্ষক-কর্মকর্তাদের

থাকে ড্রাইভার হেলপার

ইকবাল হোসাইন রুদ্র, ইবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকাস্থ রেস্ট হাউসে থাকেন বিভিন্ন পরিবহনের ড্রাইভার-হেলপাররা। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অফিসিয়াল কাজের সুবিধার জন্য ঢাকায় রেস্ট হাউস তৈরি করা হলেও একটি বড় অংশ সেখানে ঠাঁই পান না। সূত্র জানায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অফিসিয়াল কাজের সুবিধার্থে ঢাকার মিরপুর ৪তলা বিশিষ্ট একটি রেস্ট হাউস তৈরি করা। এর ৪র্থ তলায় মাদ্রাসার কার্যক্রম চলে। আর বাকি তিনতলা রেস্ট হাউস হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এখানে প্রায় ২১টি সিট আছে। নিয়ম অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা শুধু অফিসিয়াল কাজে এসে এখানে থাকতে পারবেন। আর প্রতিদিন ৫০ টাকা হারে সিট ভাড়া দিতে হবে। বাইরের কেউ থাকতে পারবে না। তবে অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন পরিবহনের ড্রাইভারদের রেস্ট হাউসে রাখা হয়। বিশেষ করে লালন পরিবহনের ড্রাইভার-হেলপার লাহুড়ি নামের এক কর্মচারীর মাধ্যমে প্রায় নিয়মিত রেস্ট হাউসে রাত যাপন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, অফিসিয়াল কাজে ঢাকা যাওয়ার আগে ফোনে সিট বুকিং দেওয়ার কথা বললে রেস্ট হাউসের কর্মচারীরা জানিয়ে দেয় সিট ফাঁকা নেই। সিট না পেয়ে বাইরের হোটেলগুলোতে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ করতে হয়। আবার অনেক প্রভাবশালী শিক্ষক তাদের আত্মীয় ও পরিচিতদের সেখানে রাখেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেহেদী ও স্বপন নামের দুই সহকারী রেজিস্ট্রারের তত্ত্বাবধানে ইবির ঢাকাস্থ রেস্ট হাউস পরিচালিত হয়। আর এটা দেখাশোনা করেন লাহুড়ি, আকিদুল ও জিলানী নামের তিন কর্মচারী। তবে লাহুড়ি নামের কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয় এস্টেট শাখা ও রেস্ট হাউসের সাবেক পরিচালক পারভেজ হাসানের খালাতো ভাই হওয়ায় সেখানে সে সর্বময় ক্ষমতাধর। লাহুড়ি কর্মকর্তা ও অন্য কর্মচারীদের তোয়াক্কা না করে নিজের ক্ষমতাবলে বহিরাগতদের রেস্ট হাউসে রাখে। লালন পরিবহনের ড্রাইভার-হেলপার তার মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে সেখানে রাত যাপন করেন। আর এই টাকার একটি অংশ পারভেজ হাসানের পকেটে আসে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

এ ছাড়া এই কর্মচারীর দ্বারা রেস্ট হাউসে বিভিন্ন অনৈতিক কার্যক্রম হয়ে থাকে বলেও অভিযোগ রয়েছে। লাহুড়ির এসব অবৈধ কাজের প্রতিবাদ করায় এক কর্মচারীকে মারধর করে সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মচারী জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় থিওলজি অনুষদের এক সিনিয়র শিক্ষক বলেন, রেস্ট হাউসে খাওয়ার সময় অনেক অপরিচিত দেখা যায়। মনে হয় ক্যাম্পাসের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা নেই।

রেস্ট হাউসের কর্মচারীদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকদের অনুরোধে বিভিন্ন সময়ে তাদের পরিচিতদের সেখানে রাখতে হয়। তা ছাড়া বাইরের কাউকে রাখা হয় না।

যোগযোগ করতে মোবাইলে কয়েকবার চেষ্টা করা হলেও লাহুড়ি ফোন রিসিভ করেনি।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার প্রধান ও রেস্ট হাউসের পরিচালক হারুন আর রশীদ বলেন, ‘আমি নতুন দায়িত্ব পেয়েছি। আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। তবে এর সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেব।’

সর্বশেষ খবর