মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

প্রচণ্ড দাবদাহে পুড়ছে দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রচণ্ড দাবদাহে পুড়ছে দেশ

চৈত্রের তীব্র তাপদাহে গতকাল রাজধানীতে তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করছেন এক শ্রমজীবী

বাড়ছে গরমের উত্তাপ। সারা দেশে গত ছয় দিনে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়েছে। গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি যা ছয় দিন আগে ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, এই তাপপ্রবাহ চলবে আরও দুই থেকে তিন দিন। গরমে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবারই নাভিশ্বাস। উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহের কারণেই বাড়ছে এই উত্তাপ। গরম থেকে বাঁচতে বিশেষ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এই গরমে বেশি সময় থাকলে হিটস্ট্রোকও হতে পারে। তাই সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, মাত্র ছয় দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা বেড়েছে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি। ৫ এপ্রিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ১০ এপ্রিল রবিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকালও ওই এলাকায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। অর্থাৎ? ছয় দিনে তাপমাত্রা বেড়েছে ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি। ৫ এপ্রিল ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ৩১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল তাপমাত্রা বেড়ে হয়েছে ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদফতরের আজকের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজও সিলেট বিভাগ ছাড়া দেশের কোথাও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। কুষ্টিয়া, পাবনা অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকা, রংপুর, দিনাজপুর, সৈয়দপুর, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর অঞ্চল ছাড়াও রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ওপর মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিস্তার লাভ করতে পারে। তাপপ্রবাহের পাশাপাশি ঝড়-বৃষ্টি এমনকি বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ও হতে পারে।

তাপপ্রবাহের কারণে অনেক এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেভাবে গরম বাড়ছে তাতে সবারই স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। বিশেষ করে শ্রমিক ও শিশুরা— যারা বাইরে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে কাজ করেন, খেলাধুলা করে। তাদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। গরমের মধ্যে কাজ করলে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। যাতে হিটস্ট্রোকের কারণের মৃত্যুও হতে পারে। জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, গরমে সবচেয়ে সচেতন থাকা উচিত খাদ্য গ্রহণের দিকে। যারা বাইরে কাজ করেন বিশেষ করে শ্রমিকরা তাদের ঝুঁকি অনেক বেশি। প্রচুর ঘামের কারণে তাদের পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। বয়স্ক ও শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। এ জন্য সবার জন্য পরামর্শ হচ্ছে কোনো ধরনের বাইরের খাবার বিশেষ করে রাস্তায় বিক্রি হওয়া পানীয়, শরবত এগুলো খাওয়াই যাবে না। ঘরের খাবারও বেশিক্ষণ রেখে খাওয়া যাবে না। এ ছাড়া বেশি করে লবণযুক্ত পানি পান করতে হবে।

সর্বশেষ খবর