দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতিকে সরকারের প্রধান লক্ষ্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার রাজনীতি ব্যক্তিগত কোনো ভোগ-বিলাসের জন্য নয়, উচ্চাভিলাষের জন্য নয়। আমার রাজনীতি বাংলার জনগণের জন্য। নিজের পরনের শাড়ির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে আমি একটা শাড়ি পরে এসেছি। আমার মেয়ের কিছু বিদেশি বন্ধু এসেছিল আজ (গতকাল)। তারা সোনারগাঁয় গিয়েছিল। সেখানে তাঁতিরা তাঁতে কাপড় তৈরি করেন। সেখান থেকে এই জামদানি শাড়িটা কিনে এনেছে। সাড়ে ছয় হাজার টাকা দাম চেয়েছিল। সেখান থেকে জামদানি শাড়িটা তারা কিনেছেন ছয় হাজার টাকা দিয়ে। গতকাল সংসদে বাজেট অধিবেশনে আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শাড়িটির দাম কম নেওয়ার জন্য জামাই বাবাজিকে বললাম, ৫০০ টাকা কম দিলে কেন, ৫০০ টাকা তো বেশিও দিয়ে আসতে পারতে। সে বলল, কিনতে গেলে তো একটু বার্গেনিং করতেই হবে। আমি এই শাড়িটি পরেই আজকে এসেছি। সংসদে বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় দেড় ঘণ্টা বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, সশস্ত্র বাহিনীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং আগামী দিনের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমি জাতির জনকের কন্যা। তার কাছ থেকে মানুষকে ভালোবাসতে শিখেছি। মানুষকে ভালোবাসি বলেই তাদের ভালো থাকাটা আমার বড় পাওয়া। এদেশের মানুষ যেন সুন্দর জীবন পায়, সেটা আমরা চাই। আমরা ক্ষমতাকে কখনো ভোগ-বিলাসের বস্তুতে পরিণত করিনি। ক্ষমতায় এসে কোন ব্র্যান্ডের কাপড় পরব, কোন ব্র্যান্ডের গাড়িতে চড়ব, কোন দেশ থেকে ফার্নিচার আনব, কত বড় ঝাড়বাতি ঘরে লাগাব, এসব চিন্তা আমরা কখনো করিনি। বসার চেয়ারকে কতটা ডেকোরেট করব, ওই চিন্তা করি না। বরং ঝাড়বাতি সরিয়ে দিয়েছি। গণভবনে বোধহয় একটা-দুটা আছে। বাকি সব সরিয়ে দিয়েছি। চেয়ারও বদলে দিয়েছি। শেখ হাসিনা বলেন, আজ আমি প্রধানমন্ত্রী, কালকে না থাকলে চলে যাব। গাড়িতেও চড়তে পারি, ভ্যানেও চড়তে পারি, রিকশায়ও চড়তে পারি, পায়েও হাঁটতে পারি। আমরা সবই পারি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিমানের ফার্স্ট ক্লাসে চড়ি। যখন প্রধানমন্ত্রী থাকব না, তখন ইকোনমি ক্লাসে চড়ব। আমরা সবকিছুর জন্য প্রস্তুত। বাবা-মা আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়েছেন। মানুষের ভালো থাকাটাই আমাদের কাছে মুখ্য। নিজেদের কথা ভাবলে দেশের এত উন্নতি করতে পারতাম না। দেশের মানুষের এখন কোনো অভাব নেই। মানুষের পেটে ভাত আছে, মাথা গোঁজার ঠাঁই আছে। যেটা বাকি আছে, সেটাও আমরা করে দেব।