শনিবার, ১ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ডাটা সেন্টার গাজীপুরে

ডিসেম্বরে উদ্বোধনের প্রত্যাশা

জয়শ্রী ভাদুড়ী

জনপ্রশাসনে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কাজের দক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা বাড়ানো, তথ্য সংরক্ষণ ও জনগণের দোরগোড়ায় ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে গাজীপুরে তৈরি হচ্ছে বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ডাটা সেন্টার। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সাত একর জমির ওপর তৈরি হচ্ছে এই ফোর টায়ার ডাটা সেন্টার। ইতিমধ্যেই ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ডাটা সেন্টার কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নে সরকার তথ্য ও প্রযুক্তির বিকাশে জোর দেয়। এর ফলে অফিস, আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, যানবাহন, টেলিকমিউনিকেশন, ভূমি ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে শুরু করে সব কিছুতেই তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়তে থাকে। তথ্য দ্রুত সরবরাহ করতে তথ্য সংরক্ষণের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু বিপত্তি বাধে এত তথ্য সংরক্ষণ করা নিয়ে। দেশে তথ্য সংরক্ষণে যে ডাটা সেন্টার ছিল, তার র‍্যাক সংখ্যা অপ্রতুল হয়ে পড়েছিল এত তথ্য সংরক্ষণ করতে গিয়ে। তাই তথ্য বিশ্বে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ফোর টায়ার ডাটা সেন্টার স্থাপনের। এর ফলে সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের যাবতীয় ডাটা সংরক্ষণ করা সুবিধা হবে।

 

তাই তথ্য সুরক্ষা ও ইন্টেলিজেন্ট এপ্লিকেশন সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে গাজীপুরের কালিয়াকৈর বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে ফোর টায়ার জাতীয় ডাটা সেন্টার নির্মাণাধীন রয়েছে। এই ডাটা সেন্টারের ডাউন টাইম হবে শূন্যের কোঠায়। ক্লাউড কম্পিউটিং ও জি-ক্লাউড প্রযুক্তিতে বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম এই ডাটা সেন্টারের নির্মাণ ব্যয় হবে ১ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংকের কাছ থেকে নেওয়া হবে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। আর সরকারের তহবিল থেকে দেওয়া হবে ৩১৬ কোটি টাকা।

বিশালাকার এই ডাটা সেন্টারে থাকছে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ৬০৪টি র‍্যাক, ৯ এমভিএ লোডের রিডান্ডেন্ট লাইনসহ সমৃদ্ধ ২৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ। উচ্চ গতিসম্পন্ন ৪০ জিবিপিএস রিডান্ডেন্ট ইন্টারনেট সংযোগও এতে থাকবে। এ ডাটা সেন্টারের জন্য দুই তলা ভবন তৈরি হচ্ছে কালিয়াকৈরে। ইতিমধ্যে নির্মাণ কাজের ৩০ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। ডাটা সেন্টারের ইলেক্ট্রিক্যাল ও আইটি ইকুইপমেন্টের স্পেসিফিকেশন চূড়ান্ত করে আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আপটাইম ইনস্টিটিউট থেকে টায়ার ফোর গোল্ড ফল্ট টলারেন্ট সার্টিফিকেশন অর্জনের মাধ্যমে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। প্রকল্পের কাজ চূড়ান্ত করে তথ্য সংরক্ষণ শুরু করতে এ বছরের ডিসেম্বরকে সময়সীমা ধরে এগোচ্ছে ডাটা সেন্টার কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের কলেবরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেশি পরিমাণ ডাটা সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা। এই বাড়তি চাহিদা মেটাতে আমরা কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে ১১ পেটাবাইট ধারণ ক্ষমতার টায়ার ফোর মানের ডেটা সেন্টার স্থাপন করছি। এই ডেটা সেন্টারে সরকারি ডেটার পাশাপাশি আমরা সীমিত আকারে বেসরকারি ডেটাও হোস্ট করব। আর নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করবে আপটাইম ইনস্টিটিউট। টায়ার ফোর মানের সার্টিফিকেশন দেওয়ার আগে আপটাইম ইনস্টিটিউট সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে বলে আমাদের ডেটা সুরক্ষিত থাকবে।

সর্বশেষ খবর