মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

সঞ্চয়পত্রের লাগাম টানতে সরকারের চিন্তাভাবনা

জানাতে হবে আয়ের উৎস

মানিক মুনতাসির

সঞ্চয়পত্রের সুদের হার না কমালেও এ খাতে বিনিয়োগের লাগাম টানতে যাচ্ছে সরকার। এখন থেকে এ খাতে বিনিয়োগকৃত অর্থের উৎস বাধ্যতামূলকভাবে জানাতে হবে। পাশাপাশি বেঁধে দেওয়া হবে একক বিনিয়োগসীমা। পরিবার সঞ্চয়পত্র এবং পেনশন সঞ্চয়পত্র এই দুই ধরনের স্কিমের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের সীমা বেঁধে দেওয়া হবে। সামাজিক নিরাপত্তার অংশ হিসেবে সরকার যাদের জন্য সঞ্চয়পত্র স্কিম চালু করেছে প্রকৃতপক্ষে তারাই যেন এ সুবিধা নিতে পারেন এজন্য এ খাতে কিছু সংস্কার আনতে যাচ্ছে সরকার। অর্থবিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ব্যাংক আমানতের চেয়ে সঞ্চয়পত্রে সুদের হার বেশি হওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। অর্থবিভাগের তথ্যমতে, গত এক বছর সঞ্চয়পত্র বিক্রি যে হারে বেড়েছে তা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে (২০১৬-১৭) জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত সর্বমোট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৬০ হাজার ৫১৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, অথচ পুরো অর্থবছরে সরকারের সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিকল্পনা ছিল ১৯ হাজার কোটি টাকার। যা বিগত অর্থবছরের (২০১৫-১৬) একই সময়ে চেয়ে ৪০ দশমিক ৩৯ ভাগ বেশি। অর্থবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, সঞ্চয়পত্রে বিনা-প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় এতে কালো টাকা বিনিয়োগ হতে পারে। এ ছাড়া প্রকৃত উপকারভোগীরা এর সুযোগ নিতে পারছেন কিনা-সেটাও নিরূপণ করা দরকার। ফলে সঞ্চয়পত্র খাতে এক ধরনের শৃঙ্খলা আনতে হলে কিছু সংস্কার প্রয়োজন। এজন্য পরিবার সঞ্চয়পত্র ও অবসরভোগীদের জন্য পেনশনার সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে সীমা আরোপ করা হবে। পাশাপাশি বাজারে প্রচলিত ৫ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্র ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো হতে পারে। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন স্বয়ং অর্থমন্ত্রী।

জানা গেছে, বর্তমানে ৫ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের মেয়াদান্তে সুদের হার হচ্ছে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। এর মধ্যে প্রথম বছরে সুদ দেওয়া হয় ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং চতুর্থ বছরে সুদের হার হচ্ছে ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ। অন্য দিকে ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদের হার হচ্ছে মেয়াদান্তে ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এই দুই সঞ্চয়পত্র এক নামে ৩০ লাখ ও যুগ্ম নামে ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত কেনা যায়।

সর্বশেষ খবর