শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে কাজ খুঁজছে রোহিঙ্গারা

যেতে চায় না ক্যাম্পে

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

মিয়ানমার থেকে অসুস্থ, আঘাতপ্রাপ্ত ও গুলিবিদ্ধসহ নানাভাবে আসা রোহিঙ্গারা সুস্থ হয়ে চট্টগ্রামে কাজ করার স্বপ্ন দেখছেন। কাজের সন্ধানে নেমে পড়েছেন চট্টগ্রামে। তাছাড়া প্রাণ বাঁচিয়ে সুস্থভাবে আসা রোহিঙ্গারাও চট্টগ্রামে কাজের সন্ধান করছেন। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ২৬ জন। তাদের পুলিশ পাহারায় কক্সবাজার পাঠিয়ে দেওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চিকিৎসা শেষে তারা টেকনাফে ফিরে যেতে রাজি নন। তারা নগর ও জেলার কোনো স্থানে কাজ করে থেকে যেতে চান।  

জানা যায়, চট্টগ্রাম নগর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে আগে থেকেই ছিলেন রোহিঙ্গারা। নতুন আসা রোহিঙ্গাদের কার্যত তারাই আশ্রয় দিচ্ছেন, কাজ পেতে সাহায্য করছেন। বিভিন্ন গার্মেন্ট ও কারখানায় রোহিঙ্গাদের কাজের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ চালাচ্ছেন রিকশা। কেউ করছেন বাসাবাড়িতে বুয়ার কাজ।

হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা ইদ্রিস বলেন, ‘সেখানে তো এখন অনেকটা মরুভূমি। সেখানে গিয়ে কি খাব, কি করব। চট্টগ্রামে কোনো কাজ পেলে করার চিন্তা করছি।’ তবে সরকারি সিদ্ধান্ত মতে, চিকিৎসা শেষে তাদের টেকনাফ-কক্সবাজারের রোহিঙ্গাদের জন্য নির্দিষ্ট শরণার্থী ক্যাম্পেই ফিরে যেতে হবে। তাছাড়া পালিয়ে আসা সুস্থ রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করে টেকনাফ-কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে বলে জানা যায়।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, ‘ইতিমধ্যে বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রায় ১০০ জনকে উদ্ধার করে টেকনাফ-কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে। তাদের আটক নয়, সরকারিভাবে যেহেতু তাদের অবস্থানের একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তাই তাদের উদ্ধার করে সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে চট্টগ্রামে তাদের অবস্থান করার কোনো সুযোগ নেই।’ সিএমপির জনসংযোগ কর্মকর্তা আকরামুল হাসান বলেন, ‘গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে ২৮ জনকে উদ্ধার করে কক্সবাজারে পাঠানো হয়েছে। নগরে নির্দিষ্টভাবে তাদের কোথাও কোনো অবস্থানের সুযোগ নেই।’ তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য নির্দিষ্ট ক্যাম্প করা হয়েছে। তবুও অনেক শরণার্থী ভুল করে অথবা অন্যভাবে চট্টগ্রামে চলে আসছে। তাদের উদ্ধার করে পুনরায় কক্সবাজারের ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রামে আসা রোহিঙ্গাদের অধিকাংশই বাঁশখালি, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, সীতাকুণ্ড, ফটিকছড়ি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও হাটহাজারীর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর