শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

নিয়মের বালাই নেই ওষুধ বিকিকিনির

মুদির দোকানে মিলে জীবন রক্ষাকারী এই উপাদান

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের অলংকার মোড়ের সৌদিয়া ফার্মেসি। ভ্রাম্যমাণ আদালত এ ফার্মেসিতে দেখতে পায়, বিপুল পরিমাণ লেবেলবিহীন ওষুধের মজুদ। ওষুধগুলোর গায়ে নেই উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ, কোম্পানির নাম, লোগো, রেজিস্ট্রেশন নম্বর। রয়েছে বিক্রি নিষিদ্ধ স্যাম্পল ও অনুমোদনহীন ওষুধ। একই এলাকার মা ফার্মেসি ও জনতা ফার্মেসিতেও দেখা যায় অনুমোদনহীন, মেয়াদোত্তীর্ণ ও লেবেলবিহীন ওষুধের ছড়াছড়ি। এ দুটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং নগরের ফার্মেসিগুলোর অনিয়ম-অসাধুতার চিত্রের দৃষ্টান্ত। নগরের সিংহভাগ ফার্মেসিরই এমন অবস্থা। জীবন রক্ষাকারী ওষুধে এখন অনিয়ম ভর করেছে। এ নিয়ে সরকারি দফতরগুলোর শক্ত কোনো নজরদারি নেই। দুই বছর আগে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ রুহুল আমীনের সাঁড়াশি অভিযানে ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা কিছুটা নমনীয় ছিল। অভিযান বন্ধের পর তারা আবারও নানা অনিয়মের পুনরাবৃত্তি করেন। তবে বর্তমানে জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে নগরের ফার্মেসি ও ক্লিনিক-হাসপাতালে অভিযান পরিচালনার বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া মুন বলেন, ‘দুটি ফার্মেসিতে অভিযান চালিয়ে নানা অনিয়ম ধরা পড়ে। তাই এখন থেকে নিয়মিতই এসব ফার্মেসিতে অভিযান পরিচালিত হবে। একই সঙ্গে নগরের হাসপাতাল-ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতেও অভিযান পরিচালিত হবে।’ ড্রাগ সুপার চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে কিছুদিন ফার্মেসির বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধ ছিল। তবে এখন আবার অভিযান শুরু হয়েছে। অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে এমন ফার্মেসিগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। ওষুধ যেহেতু একটি স্পর্শকাতর বিষয়, তাই এটি নিয়ে অনিয়ম করলে কোনো ফার্মেসিকে ছাড় দেওয়া যাবে না।’ চট্টগ্রাম ড্রাগ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে নগর ও জেলায় অনুমোদিত ফার্মেসি রয়েছে প্রায় ১০ হাজার। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক ফার্মেসি বন্ধ। তবে ফার্মেসিগুলোর দাবি, বর্তমানে চট্টগ্রামে বৈধ-অবৈধ মিলে প্রায় ৫০ হাজার ফার্মেসি আছে। অভিযোগ আছে, নিবন্ধনের বাইরে কয়েকগুণ বেশি ফার্মেসি আছে চট্টগ্রামে। নিবন্ধনহীন এসব ফার্মেসি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির বাইরে। ফলে তারা নানা অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে ব্যবসা করছে। সরেজিমন দেখা যায়, গ্রাম পর্যায়ে ওষুধ বিক্রি হয় পানের দোকান, মুদির দোকানসহ অন্যান্য স্থানেও। এসব দোকান থেকেই প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ওষুধ কিনছেন ক্রেতারা। নিয়ম বহির্ভূতভাবে ওষুধ খেয়ে অনেকে পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলেও অভিযোগ আছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর