সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
গবেষণা

হাম প্রতিরোধে দরকার দুবার টিকা প্রদান

জিন্নাতুন নূর

বাংলাদেশে জন্মের পর শিশুদের রোগ প্রতিরোধের জন্য বেশ কয়েকটি টিকা দেওয়া হয়। যার মধ্যে একটি হচ্ছে হামের টিকা। আগে এই রোগ প্রতিরোধের জন্য শিশুদের একবার টিকা দেওয়া হলেও রোগ সম্পূর্ণ নিরাময়ের জন্য ২০১২ সাল থেকে দুই ডোজ করে হামের টিকা প্রদান শুরু করা হয়। গবেষণার প্রাপ্ত ফলাফলে জানা যায়, হামের টিকা দেওয়া শিশুদের মধ্যে এক-চতুর্থাংশের রোগ নিরাময়ের জন্য দুবার টিকা প্রদান প্রয়োজন। অর্থাৎ হাম নিরাময়ে শিশুদের দুই মেয়াদে (এক বছর ও ছয় বছর বয়সে) হামের টিকা প্রদান করা বাধ্যতামূলক। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর জন্য সবচেয়ে বড় পঞ্চম কারণ  হচ্ছে হাম। আর প্রতিষেধক দেওয়া না হলে একটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই রোগ দ্রুত ছড়ায়। ২০০৫ সালে বাংলাদেশে হামে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ৯৩৫ জন। আর হাম সংক্রান্ত ক্যাম্পেইন শুরু হলে দেশে হামে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমে দুই হাজার ৬৬০ জনে দাঁড়ায়। গবেষণায় দেখা যায়, শিশুদের সুস্থতার জন্য এক ডোজ টিকা যথেষ্ট নয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. শারমিন সুলতানা তার সহকর্মীদের নিয়ে এ বিষয়ে নতুন এক গবেষণা করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল অব মেডিকেল বায়োলজিতে ‘এন্টিবডি রেসপন্স ইন বাংলাদেশি চিলড্রেন ফলোয়িং মিয়াসেলস ভাস্কিনেশন’ শীর্ষক প্রকাশিত গবেষণায় দেখা যায়, হামের টিকা দেওয়া শিশুদের মধ্যে এক চতুর্থাংশ শিশু যাদের একবার টিকা দেওয়া হয়েছে তারা পুরোপুরি এ রোগ থেকে সুস্থ হয়নি। এদের অনেকের দেহ হাম পুরোপুরি প্রতিরোধ করতে সক্ষম নয়। গবেষণাটি বিভিন্ন বয়সী ৭৭ জন শিশুর ওপর পরিচালিত হয়। যাদের মাত্র একবার হামের টিকা প্রদান করা হয়। ডা. শারমিন সুলতানা জানান, গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলে দেখতে পাই, একবার যে শিশুকে টিকা দেওয়া হয়েছিল তাদের দেহ পুরোপুরি হাম প্রতিরোধে সক্ষম নয় এবং এই শিশুদের সুস্থতার জন্য অবশ্যই দুবার হাম প্রতিষেধক প্রয়োজন। এই গবেষক জানান, শিগগিরই তিনি গবেষণাটির ফলোআপ করবেন। এরই মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে ২০১২ সাল থেকে হাম প্রতিরোধের জন্য দুইবার করে শিশুদের এই টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। আর এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ২০২০ সালের মধ্যে হামমুক্ত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর