বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
যশোরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ

যে কারণে প্রাণ গেল দুই ভাইয়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরে কেমিক্যালবাহী কাভার্ড ভ্যানে আগুন লেগে নিহত দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন যশোর শহরতলীর শেখহাটি এলাকার আবু বক্কারের দুই ছেলে পিকলু (৩২) ও রুহুল আমিন (২০)। সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে যশোর-মাগুরা সড়কের কিসমত নওয়াপাড়ায় একটি গ্যারেজে আগুন লেগে দুটি কাভার্ডভ্যান ও একটি ট্রাক সম্পূর্ণ পুড়ে বিনষ্ট হয়। এছাড়া আরও দুটি ট্রাক আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘটনাস্থলে আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে যান পিকলু ও রুহুল আমিন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স যশোরের সহকারী পরিচালক পরিমল চন্দ  কুন্ড বলেন, শুধুমাত্র অজ্ঞতার কারণেই সোমবার রাতের দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। কেমিক্যালবাহী কোনো গাড়িতে আগুনের কাজ করার আগে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী লোকের সার্টিফিকেট নেওয়ার রীতি রয়েছে উন্নত দেশে। কিন্তু আমাদের দেশের এমন কাজ অহরহ হচ্ছে এবং জীবনহানির ঘটনা ঘটছে।

 তিনি বলেন, কাভার্ডভ্যানে কী ধরনের কেমিক্যাল ছিল তা নিরূপণ করা না গেলেও সেখানে অ্যালকেন, অ্যালপিন বা অ্যালকোহলিক কোনো সাবস্ট্যান্স অথবা ইথানল, মিথানল বা ওই জাতীয় কোনো সাবস্ট্যান্স ছিল; যা অত্যন্ত দাহ্য পদার্থ। আর এগুলোর পাত্র স্টিল হওয়াতে ঝাঁকুনিতে সেখানে কোনো গ্যাস তৈরি হয়ে থাকতে পারে। গ্যারেজে ইলেক্ট্রোড ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে স্পার্কের কোনো সংযোগ হওয়ায় তাত্ক্ষণিক বিস্ফোরণ ঘটে। তিনি বলেন,‘এখনো যদি আমরা মান্ধাতার আমলের ট্র্যাডিশনাল সিস্টেমে চলি, তাহলে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে’।

এদিকে সোমবারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির মোট পরিমাণ ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে তাত্ক্ষণিকভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে যশোর জেলা মোটর ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনু  জানান, চারটি গাড়ি আর কেমিক্যালসহ অন্তত দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঘটনাস্থলে তার একটি ট্রাক ছিল, সেটিও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নিহত দুইজনের পরিচয় শনাক্ত হওয়ার কথা স্বীকার করে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাহউদ্দীন শিকদার জানান, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু এবং দুর্ঘটনার ঘটনায় একটি জিডি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। শেখহাটি এলাকার মুকুল হোসেন বলেন, পিকলু দীর্ঘদিন ধরে গাড়ির ডেন্টিং-পেইন্টিং ও বডির কাজ করতেন। আগে তার দোকান ছিল শহরের নওয়াপাড়া রোডে। মাস ছয়েক আগে তিনি যশোর-মাগুরা সড়কের কিসমত নওয়াপাড়া এলাকায় ওই প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করেন। রাতে তারা দুই ভাই সেখানে কাজ করছিলেন।

সর্বশেষ খবর