শনিবার, ২৬ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

জাল নোট ঠেকাতে মাঠে বাংলাদেশ ব্যাংক

আলী রিয়াজ

ঈদকেন্দ্রিক জাল নোট কারবারিদের ঠেকাতে এবার মাঠে নামছে বাংলাদেশ ব্যাংক। জাল নোট কারবারিদের হাত থেকে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের রক্ষা করতে কয়েক বছর ধরে জাল নোট শনাক্তকারী মেশিন সরবরাহ ও আসল নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করতে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়ে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ছাড়া ব্যাংকের কমকর্তারাও সরাসরি লেনদেন পর্যবেক্ষণ করবে। সব ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যাতে কোনো জাল নোট সিন্ডিকেট ব্যাংক কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ছড়াতে না পারে সে জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, জাল নোট শনাক্তের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সচেতন না থাকায় অনেক ব্যবসায়ী ও ক্রেতা নোট জালকারী চক্রের ফাঁদে পড়েন। এবার জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে ৫৬টি ব্যাংককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের জাল ও অচল নোট প্রতিরোধ ও পর্যালোচনা কোষ বিভাগ থেকে সব ব্যাংকে নির্বাহীদের কাছে পাঠানো নির্দেশনায় আসল নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংবলিত ভিডিওচিত্র ব্যাংকের সব শাখা এবং রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১১ থেকে ২২ জুন পর্যন্ত এটি প্রচার করতে হবে। ঢাকাসহ সারা দেশের ৫৬টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভিডিও প্রচারের তারিখ ও স্থান সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে নির্দেশনায়। এ ছাড়া সব ব্যাংকের এটিএম মেশিনে টাকা ঢোকানোর আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জাল নোট শনাক্তকারী মেশিন দিয়ে পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। গ্রাহকের কাছ থেকে নোট নেওয়া এবং গ্রাহককে নোট দেওয়ার সময়ও জাল নোট শনাক্তকারী মেশিন দিয়ে পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। পবিত্র রমজান উপলক্ষে নোট জালকারি চক্রের অপতৎপরতা প্রতিরোধে বিশেষ উদ্যোগ নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের তফসিলী সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাল নোট প্রতিরোধসহ দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরের জনসমাগমস্থলে সপ্তাহের যে কোনো এক দিন সন্ধ্যার পর এক ঘণ্টা করে আসল নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য নিয়ে তৈরি করা ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করতে হবে। প্রতিটি শাখার ভিতরে থাকা টিভিতে এই ভিডিও প্রদর্শন করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, জনসচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সারা দেশে আসল নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংবলিত হ্যান্ডবিল বিতরণ করা হবে। ১০০, ৫০০ ও ১০০০ হাজার টাকা মূল্যমানের নোট বেশি জাল হয়।

 এ কারণে হ্যান্ডবিলের পাশাপাশি এসব নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যবিষয়ক পোস্টার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ইউএনও অফিস, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের অফিসের নোটিস বোর্ডে টানানোর ব্যবস্থা করা হবে।

রমজানে প্রতি সপ্তাহে আসল নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংবলিত বিজ্ঞাপন পত্রিকায় প্রকাশিত হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দেবাশিষ চক্রবর্তী বলেন, জাল নোট নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক আছে। ঈদে এই চক্রের তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। এ জন্য আমরা জাল নোট ঠেকাতে সব ব্যাংককে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব উদ্যোগে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবে।

সর্বশেষ খবর