শুক্রবার, ২২ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

বীরাঙ্গনা হালিমা অনাহারে বিনা চিকিৎসায়

রাহাত খান, বরিশাল

বীরাঙ্গনা হালিমা অনাহারে বিনা চিকিৎসায়

বরিশাল মহানগরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আলেকান্দার বীরাঙ্গনা হালিমা বেগম। তিনি অনাহারে বিনা চিকিৎসায় ধুঁকছেন। দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো সহায়তা পাচ্ছেন না। হারিয়েছেন মানসিক ভারসাম্যও। কেউ কোনো কথা বললে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকছেন। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান থাকলেও ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি এখন অর্থাভাবে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। হানাদারদের নির্মম নিষ্ঠুরতার ঘৃণা-কষ্ট নিয়েই সারাটি জীবন কাটিয়েছেন হালিমা বেগম। এখন নীরবে-নিভৃতে ঝরাচ্ছেন চোখের জল। বর্তমানে হৃদরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হালিমা বেগম। হতদরিদ্র হওয়ায় তার পরিবারের পক্ষে চিকিৎসা খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। অর্ধাহারে-অনাহারে কাটছে জীবন। কেউ তার খোঁজও রাখেন না। পরিবারটি এখন অসহায়। হালিমার ছেলে নান্না কাজী জানান, ১০ বছর আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ভারসাম্য হারিয়েছেন মা। তারা অন্যের জমিতে পরগাছার মতো থাকছেন। জোটে না তিন বেলা ভালোমন্দ খাবার বা চিকিৎসা-ওষুধ। বর্তমানে মায়ের অবস্থা খুবই খারাপ। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তিনি। তার অসহ্য যন্ত্রণা সইতে পারছি না। দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ফল হচ্ছে না। হালিমার ছেলেবউ রহিমা বেগম জানান, নানা রোগে আক্রান্ত তার শাশুড়ি নীরবে অশ্রু ঝরান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তার শাশুড়ি প্রত্যেক নামাজের পর মোনাজাতে কান্নাকাটি করতেন। শুনেছি পাক বাহিনীর হাতে সম্ভ্রম হারানোর কথা।

এতদিন লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি চেপে গেলেও বর্তমান সরকার বীরাঙ্গনাদের তালিকা করার উদ্যোগ নেওয়ায় অন্ধকারের মধ্যে আলো দেখছেন তারা। বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, হালিমা বেগম যদি প্রকৃত অর্থেই বীরাঙ্গনা হন, তবে যাচাই-বাছাইসাপেক্ষ তিনি সরকারি সুযোগ-সুবিধার আওতায় আসবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর