রবিবার, ১৫ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিএনপি ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ রক্তের নদী হবে : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিভেদ ভুলে মুক্তিযোদ্ধাদের দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবৃক্ষ দেশব্যাপী ডালপালা বিস্তার করেছে, এর মূলোৎপাটন করতে সব মুক্তিযোদ্ধাকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যথায় বিএনপি এক দিনের জন্য ক্ষমতায় এলেও বাংলাদেশ রক্তের নদী হবে। বাংলাদেশ লাশের পাহাড় হবে। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ আবার পাকিস্তানি ধারায় প্রত্যাবর্তন করবে। এই বিএনপি আপনাদের আবার বাড়িছাড়া করবে। গতকাল সকালে রাজধানীর ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চ এর আয়োজন করে। নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলাম (অব.), মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল হেলাল মোর্শেদ (অব.), কবীর আহমেদ খান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভাইস চেয়ারম্যান ইসমত কাদির গামা, সালাউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

মুক্তিযোদ্ধারা কি ঐক্যবদ্ধ— প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখনো ঘরের মধ্যে ঘর আছে। এখনো মশারির মধ্যে মশারি আছে। সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে যে চ্যালেঞ্জ এবং সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবৃক্ষ দেশব্যাপী ডালপালা বিস্তার লাভ করেছে এর মূলোৎপাটন করতে হলে সব মুক্তিযোদ্ধাকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যারা বাইরে আছেন তাদের এক জায়গায় আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের শত্রুরা দুর্বল নয়। শত্রুরা একমঞ্চে, তারা এক প্লাটফরমে ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে আমরা কেন ঐক্যবদ্ধ হতে পারব না! আমাদেরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। দেশের উন্নয়ন-অর্জনকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে হবে।

মুক্তিযোদ্ধাদের ‘আশার আলোকবর্তিকা’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শত্রুদের আগামী জাতীয় নির্বাচনে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত করার শপথ নিয়ে এখন থেকেই সবাইকে হাতে হাত রেখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন— এ আহ্বান জানাই।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমত কাদির গামা তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সংসদে অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন। আগামী সংসদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে মনোনয়ন দেবেন। এ সংখ্যা যেন ১০০ কিংবা তার চেয়ে বেশি হয় সে দাবি করছি।

মন্ত্রী শাজাহান খান ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে জামায়াত-শিবির, যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের সন্তান ও তাদের উত্তরসূরিদের সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া বন্ধ করা; জামায়াত-শিবির ও স্বাধীনতাবিরোধী যারা সরকারি চাকরিতে বহাল আছে তাদের তালিকা করে বরখাস্ত করা; যুদ্ধাপরাধীদের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ও জামায়াত-শিবির স্বাধীনতাবিরোধীদের পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলো রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা; মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ক্ষুণ্নকারী, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষকারীদের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের ‘হলোকাস্ট অ্যাক্ট’ বা ‘জেনোসাইড ডিনায়েল ল’-এর আদলে আইন করে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে বিচার করা; ২০০১, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা গণহত্যা, ধর্ষণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে এবং যারা আগুনসন্ত্রাসকে সমর্থন করেছে, স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল গঠন করে তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র হত্যার গুজব ছড়িয়ে যারা উসকানি দিয়েছে, যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির বাড়ি অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছে তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেওয়া।

সর্বশেষ খবর