মঙ্গলবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

সঠিক অবস্থা জানলে তারা দ্বিতীয়বার ভাবতেন : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

শহিদুল আলমের মুক্তি চেয়ে অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বিবৃতি প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন,  আন্তর্জাতিক নামকরা যেসব ব্যক্তি বিবৃতি দিয়েছেন তারা বাংলাদেশের বাস্তবতা সম্পর্কে সঠিকভাবে অবহিত হননি। শহিদুল আলম গণমাধ্যমের একজন কর্মী এবং নামকরা চিত্রগ্রাহক। যারা বিবৃতি দিচ্ছেন তারা সঠিক অবস্থা জানলে হয়তো দ্বিতীয়বার চিন্তা করতেন বিবৃতি দিবেন কিনা। তথ্যমন্ত্রী গতকাল বিবিসি বাংলার সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, শহিদুল আলম তিনবার প্রকাশ্যে সরাসরি টেলিভিশনে এসে এবং ফেসবুকে লাইভে এসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে উসকানি প্রদান করেছেন এবং উত্তেজনাকর কথাবার্তা বলেছেন, যা দেশের আইনের পরিপন্থী।” শুধু শহিদুল আলমের বিষয়ে নয়, বাংলাদেশের নানা বিষয় নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এবং খ্যাতনামা ব্যক্তিরা যখন কোনো বিবৃতি দেন, তখন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার কোনো চাপের মধ্যে পড়ে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু বিদেশিদের বিষয় নয়, দেশের অভ্যন্তরে যদি কোনো বুদ্ধিজীবী এবং গণমাধ্যম কর্মীরা কোনো রিপোর্ট উত্থাপন করেন তাহলে সরকার সেগুলো গ্রাহ্য করার চেষ্টা করে, কোনো চাপের মধ্যে পড়ে না। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যখন হচ্ছে, সাজা হচ্ছে, তখনো বহু দেশের রাষ্ট্রপতি ফোন করে আমাদের অনুরোধ করেছেন সাজা না দেওয়ার জন্য।.... তারা একেবারে জঘন্য যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে ওকালতি করেছেন। এতে মনে হয়েছে বহু সময় বিদেশিরা আমাদের দেশের বাস্তব আইনও জানেন না এবং যার সম্পর্কে বিবৃতি দিচ্ছেন তার অবস্থানও জানেন না।”

কিছু বিদেশি সংস্থা প্রায়ই বাংলাদেশ সম্পর্কে বিবৃতি দেয়, একথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন ওরা বাংলাদেশের ‘বাস্তব অবস্থার তোয়াক্কা করে না’। তারা বছরের পর বছর একই বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছে, কাটিং অ্যান্ড পেস্টিংয়ের মতো।”

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই বলে বিভিন্ন পক্ষ থেকে যেসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে সেগুলো খারিজ করে দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে বর্তমানে তিন হাজারের বেশি খবরের কাগজ প্রকাশিত হয় এবং ৪১টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।

হাসানুল হক ইনু বলেন, ছাত্র বিক্ষোভের সময় শহিদুল আলম ‘মিথ্যা তথ্য’ দিয়েছেন। ছাত্র বিক্ষোভ সম্পর্কে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টের প্রসঙ্গ টেনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সে সময় নারী লাঞ্ছনা এবং হত্যাকাণ্ডের কোনো ঘটনা ঘটেনি। মিথ্যা তথ্য দিলে তার বিরুদ্ধে যদি কোনো আইনগত ব্যবস্থা কেউ নিয়ে থাকে, তাহলে সেটা মত প্রকাশের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নয়।

প্রসঙ্গত, আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের মুক্তির দাবি জানিয়ে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সম্প্রতি একটি বিবৃতি দেন। ভারতের আউটলুক ইন্ডিয়া ম্যাগাজিন ওই বিবৃতিটি প্রকাশ করে।

সর্বশেষ খবর