বৃহস্পতিবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

তবু চলছে অটো-ভটভটি

কেউ শোনে না কারও কথা, ৫০-১০০ টাকায় ‘ম্যানেজ’ পুলিশ

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

তবু চলছে অটো-ভটভটি

রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে এখনো দাপট কমেনি তিন চাকার যানবাহনের। ছবিটি গতকাল সাতমাথা থেকে তোলা

মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হলেও তা মানছেন না রংপুরের চালকরা। গত দুই দিনে ৪০০ যানবাহন আটক করার পরও এ অনিয়ম ঠেকাতে পারছে না হাইওয়ে পুলিশ। বিভাগের আট জেলার মহাসড়কগুলোয় অবাধে চলছে তিন চাকার যানবাহন।

চালকরা বলছেন, হাইওয়ে পুলিশকে টাকা দিয়েই তারা মহাসড়কে অটোরিকশা, টেম্পো, নসিমন ও ভটভটি চালাচ্ছেন। তবে এ অভিযোগের ভিত্তি নেই বলে দাবি করেছেন হাইওয়ে পুলিশের বড় এক কর্মকর্তা।

জানা গেছে, রাজধানীসহ সারা দেশের সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সোমবার সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের সভায় মহাসড়ক থেকে ভটভটি, নসিমন, করিমন, অটোরিকশা, টেম্পো, ব্যাটারিচালিত যানবাহনের চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধে কঠোর নির্দেশ দেন।

এ নির্দেশনা পেয়েই মঙ্গলবার সকাল থেকেই মহাসড়কে অভিযানে নামেন হাইওয়ে পুলিশ রংপুর সার্কেলের সাত থানা ও ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা। পঞ্চগড়ের বোদা হাইওয়ে ফাঁড়ি, তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানা, দিনাজপুরের দশমাইল হাইওয়ে ফাঁড়ি, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বড়দরগাহ হাইওয়ে ফাঁড়ি, তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানা, লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা হাইওয়ে ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা নিজ নিজ এলাকায় মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন ধরপাকড় শুরু করেন। রংপুরের তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি আবদুল্লাহ হেল বাকি জানান, দুই দিনে ১১০টি অটোরিকশা, নসিমন ও ভটভটি আটক করা হলেও চলাচল বন্ধ হচ্ছে না। মিঠাপুকুর উপজেলার দমদমা এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের অটোরিকশা চালক মজিবর রহমান জানান, ‘পুলিশের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে দৈনিক ১০০ টাকা দিয়া অটো চালাইতেছি।’

তারাগঞ্জ উপজেলা সদরে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে অটোরিকশাচালক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘৫০ টাকা পুলিশকে দিয়ে অটো চালান নাগে। টাকা না দিলে অটো ধরে ৫০০-১০০০ টাকা জরিমানা করে।’ আর কাউনিয়া উপজেলার কল্যাণী বাজারের ডিজেলচালিত টেম্পোচালক নুর ইসলাম বলেন, ‘পুলিশকে দৈনিক ১০০ টাকা দিয়া রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে টেম্পো চালাই। পুলিশ কোনো ঝামেলা করে না।’ তবে এ অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে হাইওয়ে পুলিশ রংপুর সার্কেলের পুলিশ সুপার ধীরেন্দ্র চন্দ্র মহাপাত্র বলেন, ‘হাইওয়ে পুলিশ সদস্যরা প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নিজ নিজ এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে মহাসড়কে সর্বক্ষণ দায়িত্ব পালন করছে। আমি নিজেও বিভিন্ন জেলায় টহল দিচ্ছি। সমস্যা হলো, যেখানে চেকপোস্ট বসানো হয় চালকরা সেখান দিয়ে খুব একটা চলাচল করে না। তারা বাইপাস বা সংযুক্ত সড়ক দিয়ে মহাসড়কে চলে আসে। টহল দিয়ে সেসব যানবাহন আটক করা হচ্ছে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর