বৃহস্পতিবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে ক্লিনিক ল্যাবে অনিয়ম চলছেই

অভিযান জরিমানায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের জামাল খান সড়কের ইউনিক হেলথ কেয়ার সেন্টারটি অনুমোদন নেয় ডায়াগনস্টিক সেন্টার হিসেবে। কিন্তু এই এক অনুমোদন নিয়েই প্রতিষ্ঠানটি করছে ‘বহুমাত্রিক ব্যবসা’। এখানে চলছে ভারতে রোগী পাঠানো, ভারত থেকে চিকিৎসক এনে রোগী দেখা, প্রিন্টিং এবং অনলাইন ব্যবসা। অনুমোদনহীনভাবে চালু করা হয় কলকাতার ‘এ্যাপেলো গ্লেনিগলস’-এর তথ্য কেন্দ্র হিসেবে ‘অ্যাপেলো ইনফরমেশন সেন্টার’।  অথচ মূল ব্যবসার (রোগ নির্ণয়) কোনো কার্যক্রম দেখা যায় না প্রতিষ্ঠানটিতে। গত মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত এসব অভিযোগে সেন্টারটি বন্ধ করে দেন। এভাবে চিকিৎসার নামে নানা বাণিজ্য করে আসছে একশ্রেণির অসাধু স্বাস্থ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানের কারণে রোগীরা প্রতারিত হয়। একই সঙ্গে তাদের ব্যয় হয় অতিরিক্ত অর্থ।   ভুক্তভোগী রোগীদের অভিযোগ, সরকারের স্বাস্থ্য খাতের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের কঠোর নজরদারির অভাবে একশ্রেণির অসাধু ‘স্বাস্থ্য ব্যবসায়ী’ যাচ্ছেতাইভাবে মানুষদের ঠকিয়ে যাচ্ছেন। এর মাধ্যমে সরকার যেমন রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়, তেমনি সাধারণ রোগীরাও নানাভাবে প্রতারণর শিকার হচ্ছেন।

তাই এ ব্যাপারে কেবল ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান নয়, স্বাস্থ্য প্রশাসনের মাঠপর্যায়ে আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। কারণ স্বাস্থ্য অধিদফতর বেসরকারি ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুমোদন দিচ্ছে। অনুমোদনের পর এসব চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান নিয়ম-নীতি মানছে কিনা তা নজরদারি করা হচ্ছে না। ফলে কার্যত প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে চলছে।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রামের ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য প্রশাসনের অভিযান শুরু হয়েছে। এ অভিযান আরও কয়েক মাস চলবে। কিন্তু অভিযান চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে নয়, সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের মধ্যেই এ ব্যাপারে পরিশুদ্ধ চেতনাবোধ জাগা উচিত। অনিয়মের বিরুদ্ধে আগে তাদেরই মানসিকতা তৈরি করতে হবে।’ জানা যায়, ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতিটি অভিযানেই ক্লিনিক-ল্যাবে নির্দিষ্ট কিছু অনিয়ম পেয়ে থাকে। এর মধ্যে থাকে ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকা, সনদধারী সেবিকা না থাকা, ব্লাড ব্যাংকে মেয়াদোত্তীর্ণ রক্ত, অনুমোদনহীন অতিরিক্ত শয্যা, অনুমোদনহীন সিসিইউ, আইসিইউ এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সনদধারী টেকনিশিয়ান না থাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্টসহ নানা অনিয়ম।  জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় ও পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরে ১০৬টি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিবেশের ছাড়পত্র আছে। কিন্তু নগরে ১৯টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই বাণিজ্য করে যাচ্ছে। তবে বাস্তবে এর চেয়ে বেশি প্রতিষ্ঠান আছে বলে অভিযোগ আছে।

সর্বশেষ খবর