বৃহস্পতিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

টিন দিয়া চকচকে ঘর কর্যা দিচে শেকের বেটি

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

টিন দিয়া চকচকে ঘর কর্যা দিচে শেকের বেটি

বগুড়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পেয়ে খুশি এক পরিবার

হামার ঘর আছিল না, লয়া টিন দিয়া চকচকে ঘর কর্যা দিচে শেকের বেটি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা)। হামার একটা ঘর হলো, সি ঘরোত ছোল-পোল লিয়া থাকিচ্চি— আঞ্চলিক ভাষায় কথাগুলো বলে আঙ্গুল উঁচিয়ে ঘর দেখাচ্ছিলেন সারিয়াকান্দি উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের সুখী বেগম। সুখী বেগম এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণামতে ঘর পেয়ে টিনের ঘরে বসবাস করছেন। তিনি বলেন, আগের সরকারগুলো এমন করে ঘর নির্মাণ করে দিলে এত গৃহহীন মানুষের কষ্ট হতো না। তাদের বৃষ্টিতে ভিজতে হতো না বা রোদে পুড়তে হতো না। প্রধানমন্ত্রীর দয়ায় তারা টিনের চালায় বাস করতে পারছেন। সুখীর মতো আরও আছেন মিনা খাতুন, সাজ্জাদ হোসেনসহ অনেকেই। তাদের কারোই ঘর ছিল না। জমি থাকলেও সে জমিতে ঘর তোলার সামর্থ্য ছিল না। কোনোমতে বেড়া, গাছের ডাল আর ছাপড়া তুলে বসবাস করতেন। এখন সেই ছাপড়া সরিয়ে নতুন ঢেউ টিনের ঘরে তারা আনন্দে বসবাস শুরু করছেন। জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামগঞ্জের দরিদ্র মানুষ মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে বৃষ্টিতে ভিজেছে, রোদে পুড়েছে। কিন্তু সরকারপ্রধানের পক্ষ থেকে ঘর পেয়ে গৃহহীনদের মুখে হাসি ফুটেছে। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের সুখী বেগমের কাছে একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল একসময় কল্পনা। ভিক্ষুক আনছার আলী বিয়ের পর দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেছেন। আনছার আলী ভিক্ষা করে যা পান তা দিয়েই তাদের সংসার চলেছে নানা দুঃখ-কষ্টের মধ্য দিয়ে। তাদের রয়েছে ২ ছেলে ও এক মেয়ে। ভেবেছিল ছেলেরা একদিন বড় হয়ে আয়-রোজগার করে একটি নিজস্ব ঘর বানাবে। কিন্তু ‘সবার জন্য বাসস্থান’ প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর সুখী বেগম খুব খুশি। জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ‘সবার জন্য বাসস্থান’ এর আওতায় যার জমি আছে ঘর নেই তার জমিতে একটি ঘর তৈরি করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। সে ঘোষণামতে বগুড়ার ১২টি উপজেলায় যাদের জমি আছে কিন্তু ঘর তোলার সামর্থ্য নেই তাদের ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জমি আছে ঘর নেই প্রকল্পের আওতায় জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে ৩টি উপজেলা সারিয়াকান্দি (৮২টি), সোনাতলা (১৬২টি), আদমদিঘীতে (১৯৯টি) মোট ৪৪৩টি ঘর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। অন্যান্য উপজেলার কাজ প্রায় শেষের দিকে। জেলা প্রশাসক নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের উপজেলাওয়ারি বরাদ্দকৃত অর্থের বিপরীতে মোট ১ হাজার ৭৭৮টি ঘরের জন্য ১৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। দ্বিতীয় পর্বে অবশিষ্ট ঘর নির্মাণ করা হবে। সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুলফিকার রহমান শান্ত জানান, যারা ঘর পেয়েছে তারা সবাই খুশি। তারা প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন। বগুড়ার ধুনটের চিকাশি ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল কাদির শিপন জানান, তার ইউনিয়নের জায়গা আছে ঘর নেই এমন ১৭৮ জনের অধিকাংশের ঘর নির্মাণ প্রায় শেষ। সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার সারওয়ার আলম জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জমি আছে ঘর নেই প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ৮১টি পরিবারকে ঘর ও ল্যাট্রিন নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর