রাজধানীর বংশালের একটি বাসায় বিজলী আক্তার (১৪) নামে এক গৃহকর্মীকে নির্মমভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গত ৯ অক্টোবর তাকে হাসপাতালে ভর্তির পর স্থানীয়রা বিজলী আক্তারের পরিবারকে নির্যাতনের বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে তারা হাসপাতালে গিয়ে মেয়ের নির্যাতনের দৃশ্য দেখতে পান। পরে তার মা বাদী হয়ে বংশাল থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহকর্তা ইসমাইল হোসেনকে আটক করা হয়েছে। তবে সন্তানসম্ভবা থাকায় অপর অভিযুক্ত গৃহকর্তার স্ত্রীকে এখন আটক করা হয়নি। তবে নজরদারিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গৃহকর্মী বিজলী আক্তার গত ৩ মাস ধরে ওই বাসায় কাজ করে। তার বাবা রিকশা চালক আবুল কাশেম ও মা রেহেনা বেগম। অন্য ৩ সন্তানকে নিয়ে তারা গ্রামের বাড়িতে থাকেন। ওই বাসায় কাজ শুরুর পর থেকেই বিজলীকে বিভিন্ন কারণে গৃহকর্তা ইসমাইল হোসেন ও স্ত্রী নাদিয়া সুলতানা পায়েল মারধর করতেন। মারধরের কাজে তারা ব্যবহার করতেন বিদ্যুতের তার দিয়ে বানানো বেত। গৃহকর্মী বিজলীর মা রেহেনা আক্তার জানান, সর্বশেষ ৮ অক্টোবর বিজলী অসুস্থ অবস্থায় পানি চাইলে গৃহকর্তা ইসমাইল হোসেন আমার মেয়ের মুখে পানিসহ গ্লাস নিক্ষেপ করে। এরপর লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে কপালের বাম পাশে, বাম চোখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। তারা আমার মেয়েকে গলায় রশি পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে রাখে। এ নির্যাতনের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ৯ অক্টোবর বিজলীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে রাজধানীর বংশাল থানায় গত ১১ অক্টোবর বাদী হয়ে তার মা রেহেনা বেগম দণ্ডবিধির ১৫৪ ধারায় মামলা করেছেন। যার নম্বর ১৯। অবশ্য তার আগেই স্থানীয়দের কাছ থেকে অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল থেকে গৃহকর্তা ইসমাইল হোসেনকে আটক করে পুলিশ।
এই মামলার সর্বশেষ অবস্থা জানতে গতকাল বংশাল থানায় যোগাযোগ করা হলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-নিরস্ত্র) মোহাম্মাদ সাহিদুর রহমান জানান, অভিযুক্ত ইসমাইলকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার আরেক আসামি তার স্ত্রী সন্তানসম্ভবা থাকায় তাকে আটক করা হয়নি। তবে তিনি পুলিশের নজরদারিতে রয়েছেন।