পাঁচ দিনেও সন্ধান মেলেনি রাজধানীর দক্ষিণখানে মা ও দুই শিশু সন্তান খুনের প্রধান সন্দেহভাজন গৃহকর্তা রকিব উদ্দীন আহমেদ ওরফে লিটনের। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত ডায়েরির তথ্য অনুযায়ী লিটনকে হন্যে হয়ে খোঁজা অব্যাহত রেখেছে রেলওয়ে পুলিশ। তবে গতকাল পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হয়নি। অন্যদিকে, জীবিত কিংবা মৃত লিটনের সন্ধান না পাওয়ায় নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নিহত স্ত্রী মুন্নী রহমানের পরিবারের সদস্যরা।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণখানের ৮৩৮ নম্বর প্রেমবাগানের চতুর্থ তলার বাসা থেকে মা মুন্নী বেগম (৩৭) এবং তার দুই সন্তান ফারহান উদ্দিন (১২) ও লাইভা ভুঁইয়ার (৩) অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেদিন থেকেই স্বামী লিটনেরও কোনো খোঁজ নেই। রেলওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, লিটনের বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। এ বিষয়ে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। র্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফিউল্লাহ বুলবুল বলেন, লিটনকে সর্বশেষ গত ১২ ফেব্রুয়ারি দেখা গেছে দক্ষিণখান এলাকায়। তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ। তার ফোনও বন্ধ। ঘটনার আলামত, পারিবারিক আত্মীয়-স্বজনদের বক্তব্য ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে এটা স্পষ্ট যে, তিনজনই হত্যার শিকার। আমরা লিটনের অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করছি।
তাকে গ্রেফতার করা গেলে ঘটনার মোটিভ সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাবে।তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, আজও (মঙ্গলবার) বাড়ির মালিকের স্ত্রী ডলি বেগমের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তিনি মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এমন তথ্য আমাদের কাছে এসেছে। তবে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চাঞ্চল্যকর এই তিন খুনের সঙ্গে তার কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
সূত্র বলছে, ঘটনাস্থল ওই বাড়িটির সিসিটিভি থাকার পরও ডিভিআর থেকে ফুটেজ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ফুটেজগুলো কি পরিকল্পিতভাবে মুছে ফেলা হয়েছে নাকি এমনিতেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মুছে গেছে তা খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিচ্ছে পুলিশ। মুছে ফেলা ভিডিও উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
নিহত মুন্নী রহমানের ভাই ও মামলার বাদী মুন্না রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যদি লিটন খুনি হয় তাহলে তাদের ওপরও হামলা চালাতে পারে। কারণ ঋণ পরিশোধ করতে লিটন তাদের কাছেও টাকা ধার চেয়েছিলেন। তবে টাকা না দেওয়ায় তাদের ওপরও তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন।