সোমবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

বাড়ছে সংক্রমণ বাড়ছে আতঙ্ক

সিলেটে একের পর এক করোনা রোগী সপ্তাহের ব্যবধানে মিলল ৪ জেলায়

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

বাড়ছে সংক্রমণ বাড়ছে আতঙ্ক

সিলেটে একের পর এক করোনা রোগীর সন্ধান পাওয়ায় পুরো বিভাগেই ছড়িয়েছে আতঙ্ক। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিভাগের চার জেলায় করোনা রোগী পাওয়ায় আতঙ্কের মাত্রা বেড়েছে। সর্বশেষ গতকাল সুনামগঞ্জে এক নারীর শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় ওই নারী করোনা আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। এর আগে সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে পাওয়া গেছে করোনা রোগী। এর মধ্যে হবিগঞ্জ ছাড়া বাকি তিন জেলার রোগী কীভাবে আক্রান্ত হয়েছেন তা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ফলে সংক্রমণ বাড়ায় আতঙ্কে রয়েছেন ওই তিন জেলার মানুষ। জানা গেছে, প্রায় একমাস আগে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার ওই নারীর স্বামী সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরেন। সর্দি, জ¦র ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত বৃহস্পতিবার তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে সুনামগঞ্জ থেকে তার নমুনা সংগ্রহ করে ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে পাঠানো হয়। এতে তার ফল পজেটিভ আসে। তবে, তার স্বামী সুস্থ রয়েছেন। এরপরও তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. শামস উদ্দিন। ওই নারী তার স্বামীর কাছ থেকে নাকি অন্য কারও মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি চিকিৎসকরা। এর আগে শনিবার হবিগঞ্জে করোনাভাইরাস পজেটিভ শনাক্ত ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্টে চাকরি করতেন। বুধবার ট্রাকে একসঙ্গে ১৬ জন হবিগঞ্জ ফেরার পথে পুলিশ আটক করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কোয়ারেন্টাইনে রেখে তাদের নমুনা পাঠানো হয় আইইডিসিআরে। শনিবার এই ১৬ জনের মধ্যে একজনের করোনা পজেটিভ হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ থেকেই করোনা সংক্রমিত হয়ে ওই যুবক হবিগঞ্জে এসেছেন বলে নিশ্চিত হয়েছেন চিকিৎসকরা। তার মাধ্যমে হবিগঞ্জের কেউ সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা নেই বলে মনে করছেন তারা। ৫ এপ্রিল সিলেটের এক চিকিৎসকের করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার সংস্পর্শে আসা ১৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু তাদের কারোরই করোনা শনাক্ত হয়নি। তবে, প্রায় এক সপ্তাহ সময় পার হলেও তিনি কার কাছ থেকে সংক্রমিত হয়েছেন তা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। যদিও চিকিৎসকের ধারণা রোগী দেখতে গিয়ে তিনি সংক্রমিত হয়েছেন। কিন্তু কোন রোগীর কাছ থেকে তিনি সংক্রমিত হয়েছেন তা এখনো শনাক্ত হয়নি। ফলে সিলেটে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়েই চলছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় অফিসের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমানের মতে সংক্রমিতদের চিহ্নিত করা সম্ভব না হলে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। তখন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। যে কারণে কারও করোনাভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ প্রকাশ পেলেই উচিত হাসপাতালে যোগাযোগ করা। কোনোভাবেই রোগটি গোপন করা যাবে না।  এতে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যাবে। এদিকে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মারা যাওয়ার পর তার নমুনা পরীক্ষায় পজেটিভ এসেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত যার মাধ্যমে ওই ব্যবসায়ী সংক্রমিত হয়েছিলেন তাকে শনাক্ত করা যায়নি।

এতে মৌলভীবাজারেও সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়েই চলছে।

সর্বশেষ খবর