মঙ্গলবার, ২৫ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

এমপির অনুসারীদের হামলা, সাংবাদিকসহ আহত ১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

এবার মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের আয়োজিত মানববন্ধনে হামলা চালিয়েছেন চট্টগ্রামের বাঁশখালী আসনের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের অনুসারীরা। হামলায় মুক্তিযোদ্ধা-সাংবাদিকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। গতকাল সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে হামলার এ ঘটনা ঘটে। হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন এমপি মোস্তাফিজুর রহমানের ব্যক্তিগত সচিব এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল এবং বাঁশখালীর পৌর মেয়র শেখ সেলিমুর হক। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হামলার ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে।  মামলায় ২৬ জনের নাম উল্লেখসহ ৬৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।’মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে হামলা চালানো হয়েছে এমপি মোস্তাফিজের নির্দেশে। মোস্তাফিজের নামে স্লোগান দিতে দিতে হামলাকারীরা অতর্কিতে আমাদের ওপর হামলা করে। তারা মাইক ভেঙে ফেলে। লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। এতে মুক্তিযোদ্ধা, সন্তান কমান্ডের সদস্য, সাংবাদিকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আমরা এ হামলার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে এমপি মোস্তাফিজের বহিষ্কার দাবি করছি।’ জানা যায়, গতকাল সকালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আলী আশরাফকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা না দেওয়া এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এমপি মোস্তাফিজের অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমেদসহ বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন শুরুর কিছুক্ষণ পর এমপি মোস্তাফিজের পক্ষে স্লোগান দিয়ে লাঠিসোঁটা দিয়ে হামলা করে ২৫-৩০ জনের একটি দল। হামলার নেতৃত্বে ছিলেন এমপি মোস্তাফিজের ব্যক্তিগত সচিব এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল এবং বাঁশখালীর পৌর মেয়র শেখ সেলিমুর হক। তাদের হামলায় মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমেদ, আবুল হাশেম, আবু তাহের, আজিমুল ইসলাম ভেদু ও আবদুর রাজ্জাক, বাঁশখালীর প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আলী আশরাফের ছেলে জহির উদ্দিন বাবর ও জয়নাল আবেদীন, সাহেদ মুরাদ সাকু আহত হন। এ ছাড়া হামলায় আহত হন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদসহ বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- এমপি মোস্তাফিজের ব্যক্তিগত সচিব এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল, আবুল কালাম, মিজানুর রহমান ও এনামুল হক। এ ঘটনায় প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আলী আশরাফের ছেলে জহির উদ্দিন বাবর বাদী হয়ে এমপি মোস্তাফিজের এপিএস তাজুল ইসলাম, পৌর মেয়র শেখ সেলিমুর হকসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ৬৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলায় নিন্দা : চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুষ্ঠানে হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ। গতকাল এক বিবৃতিতে সংসদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবদুল হাই, এম এ রশিদ, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব শফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, আলহাজ শরিফ উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী বীরপ্রতীক, চট্টগ্রামের কমান্ডার শাহাবুদ্দীন ও ফরিদপুরের কমান্ডার আবুল ফয়েজ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর