যানজট নিরসন ও শহরের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য খুলনা নগরীর ব্যস্ততম শেরেবাংলা রোড ৭৫-৮০ ফুট চওড়া করা হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ের প্রশস্তকরণ প্রকল্পের ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ময়লাপোতা মোড়ে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) বরাদ্দ দেওয়া জমিতে নির্মিত ভবন বিড়ম্বনা তৈরি করেছে। ৮০ ফুট সড়কের মধ্যে প্রায় ২০ ফুট এই ভবনের মধ্যে। সড়ক নির্মাণ করতে হলে এই ভবন ভাঙতে হবে। একইভাবে জমির অধিগ্রহণ জটিলতায় আটকে গেছে শিপইয়ার্ড চারলেন সড়ক। ২০১৩ সালে প্রকল্প অনুমোদন হলেও এখনো সড়ক নির্মিত হয়নি। উপরন্তু প্রকল্প ব্যয় বেড়েছে কয়েকগুণ। খানজাহান আলী রোডে শ্রম মন্ত্রণালয়ের জমিতে ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে হাসপাতাল নির্মিত হলেও এর সামনে কেসিসির জমি অবৈধ দখলে থাকায় চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এভাবে খুলনায় সরকারি উন্নয়ন সংস্থার সমন্বয়নহীনতায় নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে। সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে মসজিদের কাছে কেসিসির কাছ থেকে কিছু জমি একোয়ার (অধিগ্রহণ) করেছে কেডিএ। ওই জমি আবার তারা বিভিন্ন সময়ে এলোটমেন্ট (বরাদ্দ) দিয়েছে। এখন মাপ দিয়ে দেখা গেছে ৮০ ফুট চওড়া সড়কের ২০ ফুট ওই স্থানে নির্মিত বিল্ডিংয়ের মধ্যে। রাস্তা একদিকে চওড়া থাকবে আর মুখের কাছে এসে কম থাকবে এটা হতে পারে না। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ-উজ্জামান বলেন, উন্নয়ন কর্মকান্ডে সমন্বয়হীনতার কারণে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নগর উন্নয়নে সমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, ২০১৩ সালে শিপইয়ার্ড সড়ক অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণে খুলনা শিপইয়ার্ড ছয় কোটি টাকা দাবি করে। সেখানে জেলা প্রশাসন সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ওই টাকা দিতে আপত্তি জানায়। আর কেডিএ বলছে, অধিগ্রহণের সব টাকা জেলা প্রশাসনকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এভাবে কালক্ষেপণ হওয়ায় ৯৯ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যয় বেড়ে ২৫৯ কোটি টাকা হয়েছে।
সরকারি এই বাড়তি অর্থ আলাদা উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা যেত। নাগরিক নেতারা বলছেন, ভবিষ্যতে শহরের জনসংখ্যা বাড়বে, আবাসন অবকাঠামো বাড়বে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করতে হবে।