রাজশাহী নগরীতে ৫ বছর আগেও বহুতল ভবন ছিল কয়েকটি। কয়েক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে বহুতল ভবনের সংখ্যা। এখন বিভাগীয় এ শহরে বহুতল ভবন দাঁড়িয়েছে কয়েকশর বেশি। নানা সংকটে এই খাতটি অবহেলায় ছিল। তবে চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর সরকারি রেজিস্ট্রেশন শতকরা ১ ভাগ কমে যাওয়া, কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ, ব্যাংকের মুনাফা কমে যাওয়ার কারণে আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এখন মানুষ ফ্ল্যাটে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আরডিএ কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, রাজশাহী নগরীতে ২০০৯ সাল থেকে বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এর আগে কেবল ১০তলা ভবন বলতে ছিল নগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড় এলাকায় জীবন বীমা করপোরেশনের ভবনটি। কিন্তু এই কয়েক বছরের ব্যবধানে ১০তলা ভবনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০টির বেশি। নগর ভবন থেকে শুরু করে আশপাশের আরও চারটি এবং সাহেববাজার এলাকায় গড়ে উঠেছে ১০টি, আলুপট্টির মোড়, লক্ষ্মীপুর মোড়, সাগরপাড়া, উপশহর, বর্ণালীর মোড়, আমবাগান, তেরোখাদিয়া, সিপাইপাড়া, কাজীহাটা ও পদ্মা আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে এসব ভবন। আর ১০তলার নিচে এবং পাঁচ তলার ঊর্ধ্বে ভবনের সংখ্যা এখন কয়েকশ।

জানা গেছে, ২০১৩ সালে রাজশাহী নগরীতে মোট ৬০০টি ভবনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে একতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত ৫৬৫টি এবং ছয়ের অধিক তলা ভবনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৩৫টি। ২০১৪ সালে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৫০২টি। এর মধ্যে ৪৮৬টি এক থেকে পাঁচতলা এবং ছয়ের অধিক তলাবিশিষ্ট ভবন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৩৫টি। ২০১৫ সাল থেকে গত বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত ৩৫৪টি ভবনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩৬টি এক থেকে পাঁচতলা এবং ছয়ের অধিক তলার ভবন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৩৩টি। রাজশাহীর গৌরহাঙ্গা-সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয় ২০০১ সালে। এরপর থেকে ওই সড়কের পাশে গড়ে উঠতে শুরু করেছে বহুতল ভবন।  রাজশাহী রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার্স অ্যাসোসিয়েশনের (রিডা) তথ্য মতে, গত ১০ বছরে রাজশাহীতে আবাসন খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে। গত ৫ বছরেই প্রায় এক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে। রিডার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান কাজী জানান, জমি কিনে বাড়ি করা অনেকের সাধ্যের বাইরে। তাই ফ্ল্যাটের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে মানুষের। এ কারণে ব্যবসায়ীরাও এ খাতে বিনিয়োগ করছেন। গত তিন মাসে শতাধিক ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে। আগে এক বছরেও এই পরিমাণ ফ্ল্যাট বিক্রি হতো না।