রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
কৃষি

বগুড়ায় টমেটো চাষে স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ায় টমেটো চাষে স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা

নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও আগাম টমেটো চাষ করে লাভের আশা দেখছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার টমেটো চাষিরা। বাজারে চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা নানা প্রতিকূলতা ও ঝুঁকি নিয়ে আগাম টমেটো চাষ করে থাকেন।

জানা যায়, চলতি মৌসুমে ধুনট উপজেলার প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে আগাম টমেটোর চাষ করা হয়েছে। আরও প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ করতে জমি প্রস্তুত করছেন টমেটো চাষিরা। ধুনট উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহিনুর আলম জানান, ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী, চিকাশী, এলাঙ্গীসহ পায় ১০টি ইউনিয়নেই কমবেশি টমেটো চাষ হয়ে থাকে। টমেটো দীর্ঘমেয়াদি একটি ফসল।

 

 বীজ বোনা থেকে শুরু করে গাছের প্রথম ফল পাকা পর্যন্ত কমপক্ষে ১০০ দিন সময় লাগে এবং ফল ধারণ জাত ভেদে ৩০-৬০ দিন স্থায়ী হয়। এ জন্য রবি মৌসুমের অনুকূল আবহাওয়ার সম্পূর্ণ সুযোগ নিতে হলে মৌসুম আসার আগেই চাষের আয়োজন করতে হয়। বর্ষাকালের চাষের জন্য এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত এবং আগাম জাতের ক্ষেত্রে জুলাই থেকে আগস্ট মাস এবং শীতকালীন চাষের জন্য সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত চারা উৎপাদনের জন্য বীজতলায় বীজ বপন করতে হয়। চারা তৈরির দুই মাস আগে বীজ বপনের জন্য বীজতলা তৈরির প্রস্তুতি নিতে হয়। বীজতলায় নির্দিষ্ট পরিমাণ জৈব সার ও অন্যান্য সার প্রয়োগ করতে হয়।

ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন শেখ জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে আগাম টমেটো চাষ করেছেন। তার টমেটোর গাছে ফুলে ফুলে ভরে গেছে।

তিনি আরও জানান, শীতকালে আগাম টমেটো চাষ করতে বেশি ঝুঁঁকি থাকে। তারপরও বেশি লাভের আশায় ঝুঁকি নিয়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও টমেটো চাষ করেছি। প্রতিটি গাছেই ফুল ধরেছে। ভালো ফলন পেতে নিয়মিত পরিচর্চা, কীটপতঙ্গ ও রোগবালাই দমনে নিয়ম মেনে কীটনাশক প্রয়োগ করছি। তবে টমেটো পাকাতে কিছুটা ঝামেলা আছে। গাছ থেকে পরিপক্ব কাঁচা টমেটো সংগ্রহ করে ২-১ দিন স্তূপ করে ঢেকে রাখতে হয়, না হলে ভালো রং আসে না। আর রং না এলে বাজারে চাহিদা কম থাকে। আশা করছি চলতি মৌসুমে ফলনও ভালো পাওয়া যাবে। তবে সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পেলে উৎপাদন আরও বাড়ানো সম্ভব হবে মনে করেন এ চাষি।

পারধুনট গ্রামের আরেক টমেটো চাষি মিন্টু মিয়া বলেন, এক বিঘা জমিতে ২০ হাজার টাকা খরচ করে টমেটো চাষ করেছি। প্রায় প্রতিটি গাছেই ফুল ধরেছে। ফলন আসা পর্যন্ত আরও প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। বাজারে দাম ভালো পেলে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করা যাবে বলে আশা করছি।

ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মশিদুল হক জানান, টমেটো চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। সরকারিভাবে এ উপজেলার ২০০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষের জন্য ১ হাজার ৫০০ জন কৃষককে কৃষি প্রণোদনা প্রদান করা হবে।

সর্বশেষ খবর