শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হচ্ছে তামাবিল স্থলবন্দর

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হতে যাচ্ছে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর। ঢেলে সাজানো হবে পুরো বন্দরটি। বাড়ানো হবে সক্ষমতা। এ লক্ষ্যে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। ‘সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) ইন্টিগ্রেটেড ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন সেক্টর ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত হবে এ উদ্যোগ। তামাবিলের সঙ্গে দেশের আরও দুটি স্থলবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার প্রকল্পে প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটানের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করছেন ব্যবসায়ীরা। সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটানের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বিদ্যমান রয়েছে। এই স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর, চুনাপাথর, কয়লা, পিঁয়াজসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। রপ্তানি হয়ে থাকে মাছ, ইট, সিমেন্ট, ফেব্রিক্স, প্লাস্টিক সামগ্রী, মেলামাইন সামগ্রী এবং ভোগ্যপণ্যসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য। আর ভুটান থেকে মূলত আমদানি হয় মৌসুমি ফল। সিলেট-তামাবিল সড়ককে এশিয়ান হাইওয়ের অন্তর্ভুক্ত করায় বেড়ে গেছে এই স্থলবন্দরের গুরুত্ব। এ ছাড়া বাণিজ্যিক গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে সিলেট-তামাবিল সড়ককে চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পও গ্রহণ করা হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ উন্নত হলে এই স্থলবন্দরটি ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (পরিকল্পনা) রফিক আহম্মদ সিদ্দিক জানিয়েছেন, ‘দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে তামাবিলসহ তিনটি স্থলবন্দর আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সে জন্য স্থলবন্দর তিনটিকে ঢেলে সাজিয়ে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে সহজ শর্তে ঋণ দেবে এডিবি। ইতিমধ্যেই প্রকল্পের ডিপিপি তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।’ সূত্র জানায়, ভারত ও ভুটানের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বাড়াতে তামাবিল স্থলবন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সাসেক ইন্টিগ্রেটেড ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় তামাবিলসহ তিনটি স্থলবন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ২১৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ১৮৭ কোটি টাকা ঋণ দেবে। বাকি অর্থের জোগান দেবে সরকার। এরই মধ্যে প্রকল্পের প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে জরাজীর্ণ অফিসের মাধ্যমেই পরিচালিত হচ্ছে তামাবিল স্থলবন্দরের কার্যক্রম।

 

আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধার অভাবে স্থলবন্দরের সুপরিসর ‘স্টক ইয়ার্ড’ প্রায় অব্যবহৃতই পড়ে আছে। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী স্থলবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অধীনে নতুন ভবন নির্মাণ এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বসানো হবে। ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবস্থা করা হবে বাড়তি সুযোগ-সুবিধার। তামাবিল স্থলবন্দরের উন্নয়ন করা গেলে আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আদায়ও বাড়বে বলে মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

এদিকে, তামাবিল স্থলবন্দরে ১০ শয্যার একটি মেডিকেল সেন্টার স্থাপনেরও উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন শেষে জায়গা নির্ধারণ করে গেছেন। মেডিকেল সেন্টারটি চালু হলে বন্দর ব্যবহারকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি জরুরি স্বাস্থ্যসেবাও দেওয়া সম্ভব হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর