সোমবার, ২১ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

ঝুলে আছে নগর ভবন ও স্টেডিয়াম নির্মাণ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ২৫ তলাবিশিষ্ট নগর ভবন নির্মাণে ২০১০ সালের ১১ মার্চ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। এরপর দীর্ঘ ১২টি বছর পার হলেও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনেই শেষ। এরই  মধ্যে দুজন নির্বাচিত মেয়র এবং একজন প্রশাসক দায়িত্ব পালন করে গেছেন। কিন্তু নগর ভবন নির্মাণ সেই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনেই সীমাবদ্ধ। কাজ শুরু তো দূরের কথা, এখনো প্রকল্প অনুমোদনও করাতে পারেনি চসিক। তবে চসিক নগর ভবন নির্মাণে প্রকল্প তৈরি করে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। কিন্তু প্রকল্পটি এখনো ফাইল চালাচালিতে। কখন কাজ শুরু হবে তার কোনো হিসাব নেই। চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, নগর ভবন নির্মাণে সোয়া ২০০ কোটি টাকার প্রকল্পটি প্রি একনেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু প্রি একনেক সভায় এর ব্যয় কমাতে বলে। পরে চসিক প্রকল্প সংশোধন করে পাঠায়। মন্ত্রণালয়ও এ প্রকল্পে ইতিবাচক মতামত দিয়েছে। এটি এখন একনেক সভার অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অন্যদিকে, চরম অবহেলা-অনাদর অবস্থায় পড়ে আছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) বাকলিয়া স্টেডিয়ামটি। ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে আলোর মশাল দেখা সেই স্টেডিয়ামটি এখন অনেকটা পরিত্যক্ত জমি। চসিকের অবহেলা এবং মামলার জালে আটকে আছে স্টেডিয়ামটির উন্নয়ন কাজ। স্টেডিয়ামের নির্ধারিত কিছু জায়গাও দখলে আনতে পারেনি চসিক।  চসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেছে। এ ব্যাপারে আলোচনা চলছে। তাছাড়া জায়গা নিয়ে চলমান মামলাগুলোও আশা করি নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। এ ছাড়া আর কোনো জটিলতা নেই।  চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২৫ তলাবিশিষ্ট ভবনের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। তবে প্রি একনেক সভায় এ প্রকল্পের ব্যয় আরও কমাতে বলা হয়। ২০২০ সালে সংশোধন করে ফের এই প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। পরে চসিক প্রকল্পটি সংশোধন করে পাঠায়। ১২ বছর পর এখন চসিকের  প্রস্তাবিত ২০ তলাবিশিষ্ট ভবনের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ২০২ কোটি ৮২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে ১৬৫ কোটি টাকা মূল ভবন নির্মাণে ব্যয় করা হবে। বর্তমানে প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় সংশোধন করে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। চসিকের সাবেক মেয়রের আমল ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নগর ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। নতুন নগর ভবনের নকশাও তৈরি করা হয়। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তখন সে বিষয়ে আগ্রহ দেখায়নি। ২০১২ সালে একটি আধুনিক, দৃষ্টিনন্দন বিশ্বমানের স্টেডিয়াম নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। জেলা প্রশাসন চসিককে মোট ৬ একর জায়গা বরাদ্দ দেয়। এর মধ্যে ৪ দশমিক ৭৫ একর ভূমি চসিককে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ১ দশমিক ২৫ একর ভূমি নিয়ে মামলা থাকায় দখল করে দেওয়া হয়নি। এখনো পর্যন্ত বসবাসরত পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন এই মাঠের চার পাশে গ্যালারি, খেলার মাঠের কার্যালয়, গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা, খেলোয়াড়দের  বিশ্রামাগার, ভিআইপি গ্যালারি, প্রেসবক্সসহ নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।

সর্বশেষ খবর