বোরো মৌসুমে জমিতে সেচ দিতে অপরিকল্পিতভাবে গভীর ও অগভীর নলকূপ থেকে পানি উত্তোলনের ফলে প্রতি বছরই রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকার কৃষিকাজে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবস্থাপনা আইন করেছে। আইনটি পাস হয়েছে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে। কিন্তু চার বছরেও এই আইনটি এ অঞ্চলে প্রয়োগ শুরু হয়নি।

রংপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যেতে শুরু করে। ১০ বছর আগে জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে পানির স্তর ১৫ থেকে ২০ ফুট গভীরে থাকলেও এখন অনেক স্থানে পানির স্তর ২৫ থেকে ৩০ ফুট নিচেও পাওয়া যায় না। পানির প্রবাহ যখন স্বাভাবিক থাকে তখন এ অঞ্চলে পানির স্তর ১২ ফুট নিচে পাওয়া যায়। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে যেখানে-সেখানে গভীর ও অগভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করার ফলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সূত্রমতে এ অঞ্চলে সেচ মৌসুমে সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ গভীর ও অগভীর নলকূপ দিয়ে পানি উত্তোলন করে জমিতে সেচ দেওয়া হয়। এর অধিকাংশই অপরিকল্পিতভাবে বসানো হয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবস্থাপনা আইন পাস হলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়নি।  সূত্র মতে, রংপুরের বদরগঞ্জ, পীরগঞ্জ ও নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে পানির স্তর সবচেয়ে বেশি নিচে নেমে যায়। শুকনো মৌসুমে এসব এলাকায় ৩০ থেকে ৪০ ফুটের নিচে না গেলে পানি পাওয়া যায় না। এসবের মূল কারণ বলে মনে করা হচ্ছে অপরিকল্পিতভাবে ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ী (ঢাকা)-এর অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু সায়েম এ প্রসঙ্গে জানান, বর্তমানে গভীর নলকূপের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। তবে মাঠ পর্যায়ে জরিমানা বা অন্য কোনো শাস্তির বিষয়টি করোনার কারণে এখনো শুরু হয়নি। অপরিকল্পিতভাবে সেচযন্ত্র স্থাপন না করার জন্য কৃষকদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বোরো চাষ কমিয়ে কৃষকদের আউশ চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে।