শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের অধিকার দেশে সংবিধান স্বীকৃত। এরপরও মানুষের এই অধিকার ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে বলে মনে করছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক নূর খান বলেন, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করার অধিকারের স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলেও আছে। এর মাধ্যমে নাগরিক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের চর্চা, মানবাধিকার এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করার ক্ষেত্র তৈরি হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশে এ অধিকার চর্চার ক্ষেত্র ক্রমশ সংকুচিত হয়ে পড়ছে। সভা-সমাবেশের অধিকার সংকুচিত হওয়ার পেছনে পুলিশ ও সরকার দলীয় কর্মী-সমর্থকদের ভূমিকার ব্যাপারে বিবৃতিতে বলা হয়, এ অধিকারের চর্চায় রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদেরও প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসন, সরকারদলীয় কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে এ অধিকার লঙ্ঘন, আক্রমণ, সহিংসতা এবং নানাভাবে হয়রানি-গ্রেফতারের অভিযোগ তীব্রতর হচ্ছে। আসক আরও বলেছে, সমাবেশ করতে গিয়ে বিএনপি যেমন নানা বিপত্তি বা বাধার সম্মুখীন হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে; তেমনি সাধারণ মানুষকেও পোহাতে হচ্ছে অবর্ণনীয় কষ্ট।
সমাবেশের কয়েকদিন আগে থেকেই পরিবহন মালিকরা গণপরিবহন বন্ধ করে দিচ্ছে। এ ধরনের অঘোষিত ধর্মঘটের কারণে জনদুর্ভোগ তীব্রতর হয়ে উঠছে। চিকিৎসাসহ নানা জরুরি প্রয়োজনে মানুষ যাতায়াত করতে পারছে না। যে অল্প পরিসরে যানবাহন পাওয়া যায়, তার লাগামহীন ভাড়া জনগণকে আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলছে।
সমাবেশের আগে ও পরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে পুলিশের অভিযান হয়েছে। তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বিএনপির অভিযোগ, সমাবেশকে কেন্দ্র করে সমর্থকদের ওপর চাপ বাড়াতে সরকার এমন অভিযান চালাচ্ছে। সমাবেশকেন্দ্রিক প্রচার-প্রচারণায় বাধা দেওয়া হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হলেও গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া বিভিন্ন সংবাদে এটি প্রতীয়মান, সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ-প্রশাসন এবং সরকারদলীয় কর্মী ও সমর্থকদের নানা তৎপরতা নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘনের পাশাপাশি জনদুর্ভোগ তীব্রতর করছে, যা অগ্রহণযোগ্য।