পাবনার সেই ৩৭ কৃষকের কৃষিঋণ মওকুফ এবং হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য আবেদন নিয়ে গতকাল ঈশ্বরদী উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান ভাড়ইমারী সবজি চাষি সমবায় সমিতির সভাপতি বিলকিস নাহার। তাঁকে আজ পাবনায় আবেদন দিতে বলা হয়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ ওই কৃষকদের ঋণের বাকি কিস্তি পরিশোধের দায়িত্ব নেওয়ায় এবং আইনি সহায়তা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত রবিবার ৩৭ জনই জামিন পান। ঋণ খেলাপির মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যাওয়া ১২ কৃষকও মুক্তি পান।
গতকাল ওই কৃষকদের অনেকে আবার নির্ভয়ে খেতের কাজে নেমে পড়েন। জামিনে মুক্ত কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, গতকাল সকাল থেকেই কৃষিকাজ করেছেন। তবে দ্রুত মামলা প্রত্যাহার চান তিনি। আরেক কৃষক জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘ঝামেলা থেইকে রেহাই পাইছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মামলা থেইকে রেহাই চাই।’
ভাড়ইমারী উত্তরপাড়া সবজি চাষি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি বিলকিস নাহার উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য। তিনি জানান, গতকাল ঈশ্বরদী সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয় গিয়েছিলেন আবেদন নিয়ে। তাকে পাবনায় দিতে বলা হয়েছে। আজ আবার পাবনা সদরে যাবেন আবেদন নিয়ে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈশ্বরদী উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আকন্দ রাব্বেউল্লাহ বলেন, ‘ভাড়ইমারী উত্তরপাড়া সবজি চাষি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি বিলকিস নাহার আবেদন নিয়ে আমার কাছে এসেছিলেন। আমি তাদের বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের প্রিন্সিপাল অফিসার ও পাবনা সমবায় ভূমি উন্নয়ন ব্যাংক লিমিটেডের ম্যানেজার বরাবর আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছি।’
এ বিষয়ে পাবনা সমবায় ভূমি উন্নয়ন ব্যাংক লিমিটেডের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের প্রিন্সিপাল অফিসার কাজী জসিম উদ্দিন জানান, তারা এলে আবেদন গ্রহণ করে প্রধান কার্যালয়ে মহাব্যবস্থাপক বরাবর পাঠানো হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে ৩৭ জন প্রান্তিক কৃষক গ্রুপভিত্তিক বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক থেকে জনপ্রতি ২৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নেন। ঋণখেলাপির দায়ে ২০২১ সালে ব্যাংকের পক্ষে তখনকার ব্যবস্থাপক সৈয়দ মোজাম্মেল হক মাহমুদ বাদী হয়ে ৩৭ জনের নামে মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে পুলিশ ১২ জনকে গ্রেফতার করে। বাকিরা গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন।
তবে কৃষকদের অনেকের দাবি, তারা ঋণ নেওয়ার পর অনেক কিস্তি পরিশোধ করেছেন। ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সেই টাকা জমা না দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা।