বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

হালদায় মা মাছের আনাগোনা

অভিযান কম হওয়ায় শঙ্কা ডিম সংগ্রহকারীদের

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

হালদায় মা মাছের আনাগোনা

উপমহাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছের আনাগোনা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে ডিম সংগ্রহ করতে প্রস্তুত সংগ্রহকারীরা। কিন্তু ছয় মাস ধরে নদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান কম হয়েছে। এ সুযোগে বেপরোয়া হয়েছে মা মাছ শিকারিরা। তাই ডিম সংগ্রহে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা যায়, হালদা নদীতে মা মাছের ডিম পাড়ার মৌসুম এপ্রিল থেকে জুন-জুলাই মাস পর্যন্ত। বজ্রসহ ভারী বর্ষণ, নদীতে পাহাড়ি ঢল ও পানির ঘূর্ণায়মান স্থানে মা মাছ ডিম ছেড়ে থাকে। গত সপ্তাহে হালকা বৃষ্টির সময় নদীতে মা মাছের আনাগোনা দেখা দেয়। এরই মধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছে ডিম সংগ্রহকারীরা। হাটহাজারীর শাহ্ মাদারি, মদুনা ঘাট ও মাচুয়াঝর্ণায় তিনটি এবং রাউজানের গহিরা, মোবারকখিল ও খাগতিয়ায় তিনটি হ্যাচারি আছে। তবে হাটহাজারীর তিনটি এবং রাউজানের একটি সচল এবং বাকি দুটি হ্যাচারি অকেজো। তাছাড়া সনাতন পদ্ধতির প্রায় ৫০টি কুয়া আছে। হালদার দুই পাড়ে ডিম থেকে রেণু ফোটানোর জন্য হ্যাচারি ও কুয়াগুলো সংস্কার করা হচ্ছে। প্রবীণ ডিম সংগ্রহকারী কামাল উদ্দিন সওদাগর বলেন, গত সপ্তাহে বৃষ্টির সময় মা মাছের আনাগোনা আমরা লক্ষ্য করেছি। তবে চূড়ান্ত পর্যায়ে এখনো তা দেখা যাচ্ছে না। এ মাসের শেষ দিকে আরেকটি জো আছে। তখন হয়তো মা মাছ ডিম ছাড়বে। প্রায় ৫০০ ডিম সংগ্রহকারী অন্তত ৩০০ নৌকা নিয়ে ডিম সংগ্রহে প্রস্তুত আছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ছয় মাস ধরে হালদা নদীতে অভিযান কম হয়েছে। এ কারণে অসাধু মা মাছ শিকারিরা নানাভাবে মাছ শিকার করতে পেরেছে। অভিযান চললে তারা ভয়ে থাকে। তাই আগামী মৌসুমে ডিম কেমন পাওয়া যাবে তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, কয়েক দিন আগে একটি জো গেছে। তখন কিছু মা মাছ দেখা গেছে। এপ্রিল মাসের শেষে আরেকটি জো আছে। ওই সময় পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে। তিনি বলেন, অতীতের তুলনায় নদীতে অভিযানসহ সামগ্রিক তদারকি কম হয়েছে। এ কারণে মা মাছের ওপরও এর প্রভাব পড়তে পারে। কারণ মা মাছের ডিম ছাড়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ পূর্বশর্ত। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহিদুল আলম বলেন, উপজেলা প্রশাসন নিয়মিত মনিটরিং করছে। এ কাজে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারকেও সম্পৃক্ত করা হয়েছে। নিয়মিত টহল জোরদার ও তদারকি হচ্ছে। নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়ে থাকে। তথ্য না এলে অভিযান হয় না। তাছাড়া কিছুদিন ধরে স্পিডবোটটি নষ্ট। এ কারণে অভিযান হয়নি। তবু গত ছয় মাসে প্রায় ২৫টি অভিযান হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর