সোমবার, ১৯ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য বগুড়ার পথে পথে

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য বগুড়ার পথে পথে

বগুড়ার পথে পথে লাল রঙের কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রীষ্মের ছোঁয়া লাগার পর থেকেই প্রকৃতির শোভা বর্ধনকারী কৃষ্ণচূড়া ফুল অপরূপ সাজে সাজিয়ে রঙিন করে তুলেছে। পথচারীদের দৃষ্টি কাড়ছে কৃষ্ণচূড়া। দূর থেকে দেখলে মনে হয়- যেন লাল রঙের পাহাড় দাঁড়িয়ে আছে মাথা উঁচু করে। কৃষ্ণচূড়া তার রক্তিম আভা ছড়ানোর মাধ্যমে প্রকৃতিকে সাজিয়ে তুলেছে অপরূপ করে। বগুড়ায় এক সময় কৃষ্ণচূড়া ও জারুল ফুল গাছ প্রচুর দেখা যেত। প্রতিবছর গ্রীষ্মে ফুল ফুটে প্রকৃতিতে শোভাবর্ধন করত। কালেক্রমে কৃষ্ণচূড়া ও জারুল এখন অনেক কমে গেছে। তারপরও বগুড়া শহরের সাতমাথা, আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাস, ফুলবাড়ী, কলোনি, বনানী, মালতীনগর, চেলোপাড়া, সেউজগাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষ্ণচূড়া শোভা পাচ্ছে। জেলা সদরের পাশাপাশি আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার জংশনের জোড়াপুকুর পাড়ে এবং এক নম্বর প্ল্যাটফরমে কৃষ্ণচূড়া গাছে থরে থরে ফুটেছে বাহারি ফুল। আর পৌর শহরের হার্ভে বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মোড়ে জারুলের সবচেয়ে বড় গাছে ফুল ফুটেছে। এ ছাড়া শহরের কলসা, ইয়ার্ডকলোনি, পোঁওতা, চা-বাগান, নতুন বাজার, সাইলো সড়কসহ বিভিন্ন এলাকা সেজেছে জারুল ও কৃষ্ণচূড়ার বেগুনি-লালের সমাহারে। বর্তমানে কাঠফাটা রোদ্দুর আর অসহ্য গরমের মধ্যেও চারদিকে দৃষ্টিনন্দন কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে যেন রঙিন করে তুলেছে। সবুজের বুক চিরে বের হয়ে আসা লাল ফুল এতটাই মোহনীয় যে, পথচারী ও স্টেশনের যাত্রীরাও তা দেখে থমকে দাঁড়াচ্ছেন। সেই সঙ্গে এসব দৃষ্টিনন্দন ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ পৌরবাসীও। শহরের রবিউল ইসলাম জানান, বগুড়ায় বিভিন্ন সড়কে এখন কৃষ্ণচূড়া ফুটে আছে। প্রকৃতিতে এখন ভিন্ন রঙ ধরেছে। দূর থেকে দেখতে ঠিক লাল পাহাড়ের মতো মনে হয়। অপরূপ শোভায় শোভিত হয়েছে কৃষ্ণচূড়া। যে কাউকে আকৃষ্ট করছে সড়কগুলো। কৃষ্ণচূড়া যদি আরও বেশি থাকত তাহলে এই এলাকাটি এক সময় পর্যটন হিসেবে গড়ে উঠত।

বগুড়ার কবি জয়ন্ত দেব জানান, প্রকৃতিতে এখন মনোমুগ্ধকর রঙ ছড়িয়ে দিয়েছে কৃষ্ণচূড়া। এক সময় প্রচুর পরিমাণে কৃষ্ণচূড়া দেখা যেত এখানে। গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়া প্রকৃতিকে সাজিয়ে তুলত। কালক্রমে জেলায় আবাসন ব্যবস্থার কারণে অনেক গাছ কাটা পড়েছে। যে কারণে কৃষ্ণচূড়ার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় বগুড়ায় আরও বেশি কৃষ্ণচূড়া রোপণের অভিযান পরিচালনা করতে হবে।

আদমদীঘি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারী জানান, কৃষ্ণচূড়া এবং জারুল অতিপরিচিত বৃক্ষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যত্রতত্র এসব বৃক্ষ জন্মালেও সান্তাহারে সবচেয়ে বেশি দেখা মিলছে কৃষ্ণচূড়ার। এসব গাছের যত্ন নেওয়া হলে গ্রীষ্মকালে প্রকৃতির সৌন্দর্য আরও বাড়বে।

কৃষ্ণচূড়ার রঙে সেজেছে দাউদকান্দি : দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি জানান, কৃষ্ণচূড়া গাছের লাল আর বিভিন্ন রঙের ফুলে সেজেছে দাউদকান্দির ও তিতাসের পথঘাট। উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইলিয়টগঞ্জ, গৌরীপুর ও উপজেলা সদরসহ আশপাশের এলাকায় শতাধিক কৃষ্ণচূড়া গাছে লাল রঙে অপরূপ দৃশ্যের অবতারণা করেছে। এ গাছগুলোর দৃশ্য নজর কাড়ছে পথচারীদের। শুধু এখানে নয় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে দেখা মিলছে কৃষ্ণচূড়ার রূপের বাহার।

উপজেলা কৃষি অফিসার বলেন, দাউদকান্দি বাজারের পোস্ট অফিসের সামনে বিশাল আকৃতির কৃষ্ণচূড়া গাছগুলোর দিকে তাকালে বিশ্বাস করতে হয় আসলে আমরা প্রকৃতির কাছে দায়বদ্ধ। প্রকৃতির সৌন্দর্যবর্ধক এই কৃষ্ণচূড়া গাছ রক্ষায় আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে, না হলে যান্ত্রিকতার ভিড়ে এক সময় খর্ব হবে প্রকৃতির ভারসাম্য।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর