বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা
চট্টগ্রাম-১০ উপনির্বাচন

কেন্দ্রে ভোটার আনাই চ্যালেঞ্জ

৩০ জুলাই ভোট, প্রত্যেক ভোটারের কাছে পাঁচবার পৌঁছাতে চায় আওয়ামী লীগ

আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

কেন্দ্রে ভোটার আনাই চ্যালেঞ্জ

সাম্প্রতিক উপনির্বাচনগুলোতে কম ভোটার উপস্থিতির কারণে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে নানা পরিকল্পনা নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। প্রত্যেক ভোটারের কাছে একাধিকবার পৌঁছে তাদের কেন্দ্রে আনতে উদ্বুদ্ধ করছেন প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকরা। জানা গেছে, সোমবার অনুষ্ঠিত ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোট দেন মাত্র ১১.৫১ শতাংশ ভোটার। এর আগে ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে ভোট দেন ১৪.৫৫ শতাংশ ভোটার। ২৫ মে অনুষ্ঠিত সন্দ্বীপ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে ভোট পড়ে ১৮.৬৫ শতাংশ। তবে গাজীপুর ও কক্সবাজারের মেয়র নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বেশি ছিল। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বিষয়টি স্বীকার করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এই নির্বাচনগুলো অল্প সময়ের জন্য অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মাত্র কয়েক মাসের জন্য এমপি নির্বাচিত করার জন্য ভোটারদের আগ্রহ কিছুটা কম। কিন্তু ভোট দেওয়া তো নাগরিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। প্রত্যেক নাগরিকের উচিত নিজ থেকে কেন্দ্রে এসে তার পছন্দের প্রার্থী নির্বাচন করা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, উপনির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহ কম।’ তিনি জানান, বিষয়টি মাথায় রেখে নগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক ভোটারের কাছে অন্তত পাঁচবার করে প্রার্থী ও নগরের নেতারা প্রচারণা চালাতে যাবেন। পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে। এর ফলে ভোটাররা কেন্দ্রে আসতে উদ্বুদ্ধ হবেন বলে বিশ্বাস নাছিরের। আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভোটারের আনুপাতিক একটা হিসাব করলে ব্যবধান খুব বেশি নয়। দুই দলের প্রত্যেকের ৩০-৪০ শতাংশের মতো ভোটার আছে। সে ক্ষেত্রে শুধু আওয়ামী লীগের ভোটাররাও যদি কেন্দ্রে আসতেন তাহলে সব মিলিয়ে ৩৫-৪০ শতাংশ ভোট কাস্ট হওয়ার কথা।’ চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘একদিকে কম সময়ের জন্য নির্বাচন, অন্যদিকে শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। যেসব প্রার্থী আছেন তাদের অবস্থান নেই। আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বিশ্বাস, নেতা-কর্মীরা সক্রিয় থাকলে তাদের প্রার্থী জিতে যাবেন। এসব কারণে ভোটাররা কেন্দ্রে আসতে উৎসাহ পাচ্ছেন না। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী শক্ত হলে ভোটাররা অবশ্যই কেন্দ্রে আসতেন।’২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের উপনির্বাচনে ৬৭ হাজার ভোট নিয়ে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ। ওই নির্বাচনে মোট ভোট পড়ে ৭৫ হাজার ৩০৫টি, যা মোট ভোটারের ১৪.৫৫ শতাংশ। নগর আওয়ামী লীগের সব কর্মকান্ডে সার্বক্ষণিক সক্রিয় এই নেতা।

জানতে চাইলে নোমান আল মাহমুদ এমপি বলেন, ‘গাজীপুর কিংবা কক্সবাজারের নির্বাচনগুলোতে প্রচুর ভোটার উপস্থিতি হচ্ছে। কারণ সেখানে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী আছে। উপনির্বাচনগুলোতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। এ কারণে ভোটারদের কেন্দ্রে আসার প্রবণতা কম। জাতীয় নির্বাচনে এমন হবে না। তখন বিপুলসংখ্যক ভোটার কেন্দ্রে আসবেন।’

চট্টগ্রাম-১০ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, ‘আমাদের বিশাল কর্মী বাহিনী আছে। মহানগর আওয়ামী লীগের নির্দেশনামতো প্রত্যেক ভোটারের কাছে একাধিকবার যাওয়া হচ্ছে। তাদের বলছি, ভোট কেন্দ্রে আসুন, যাকে খুশি তাকে ভোট দিন। আশা করছি এখানে ভালো কিছু হবে।’

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর