শনিবার, ২৯ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

আশ্রয়ণে ঠাঁই পেয়ে হাসছে ৫২৭৮ পরিবার

চট্টগ্রামে আট উপজেলা ভূমিহীন শূন্য ঘোষণা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

আশ্রয়ণে ঠাঁই পেয়ে হাসছে ৫২৭৮ পরিবার

চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় হালনাগাদ তালিকামতে, ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার ৬ হাজার ৩৬৭টি। এর মধ্যে ৫ হাজার ২৭৮টি পরিবার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় চার দফায় ভূমিসহ ঘর পেয়েছে। ভূমি ও ঘর পেয়ে এসব পরিবারের সদস্যদের চোখে-মুখে এখন স্বস্তির হাসি।

চট্টগ্রামে ইতোমধ্যে আটটি উপজেলা ভূমিহীন-গৃহহীন শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। সন্দ্বীপ উপজেলার ৯২৩ গৃহহীন পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণকাজ চলছে। এসব ঘর নির্মাণকাজ শেষ হলে এ উপজেলাও ভূমিহীন-গৃহহীন শূন্য ঘোষণা করা হবে। ‘মুজিব শতবর্ষে একজন লোকও গৃহহীন থাকবে না’ শীর্ষক স্লোগানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ভারত, কলম্বিয়াসহ কয়েকটি দেশে ঘর প্রদান কার্যক্রম রয়েছে। তারা স্বল্প সুদে ঋণের মাধ্যমে ঘর করে দেয়। কিন্তু বাংলাদেশে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ২ শতাংশ জমিতে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে জমিসহ ঘর করে দেওয়া হচ্ছে। এ প্রকল্পের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে নারীর অধিকার নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ৫০ শতাংশ মালিকানা থাকছে মহিলাদের। এ প্রকল্পের মনস্তাত্ত্বিক দিক হলো, উপকারভোগীদের সমবায় সমিতি করে দেওয়া ও আয়বর্ধক কাজের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যাতে তারা অন্তর্বর্তীমূলক উন্নয়নকাজে অংশ নিতে পারে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে চট্টগ্রামে আটটি উপজেলা গৃহহীন-ভূমিহীন শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। এটি সরকারের একটি বড় অর্জন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, হালনাগাদ তালিকায় চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার ছিল ৩২৫টি। এর মধ্যে প্রথম দফায় ২০০, দ্বিতীয় দফায় ৩০ এবং তৃতীয় দফায় ৯৫টি পরিবারকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ঘর ও ভূমি দেওয়া হয়। কর্ণফুলী উপজেলায় ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার ছিল ৪০টি। এর মধ্যে প্রথম দফায় ২৫, দ্বিতীয় দফায় ৫ এবং তৃতীয় দফায় ১০টি পরিবারকে ঘর ও ভূমি দেওয়া হয়। আনোয়ারা উপজেলায় ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার ছিল ৪১৫টি। এর মধ্যে প্রথম দফায় ১৫, দ্বিতীয় দফায় ৫০, তৃতীয় দফায় ২৩০ এবং চতুর্থ দফায় ১২০টি পরিবারকে ঘর ও ভূমি দেওয়া হয়। বোয়ালখালী উপজেলায় ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার ছিল ১৫৩টি। এর মধ্যে প্রথম দফায় ২০, দ্বিতীয় দফায় ২০, তৃতীয় দফায় ৬০ এবং চতুর্থ দফায় ৫৩টি পরিবারকে ঘর ও ভূমি দেওয়া হয়। চন্দনাইশ উপজেলায় ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার ছিল ২৫১টি। এর মধ্যে প্রথম দফায় ২৯, দ্বিতীয় দফায় ২৭, তৃতীয় দফায় ৮০ এবং চতুর্থ দফায় ৯০টি পরিবারকে ঘর ও ভূমি দেওয়া হয়। সাতকানিয়া উপজেলায় ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার ছিল ৮৮টি। এর মধ্যে প্রথম দফায় ৩০, দ্বিতীয় দফায় ১০ এবং তৃতীয় দফায় ৪৮টি পরিবারকে ঘর ও ভূমি দেওয়া হয়। লোহাগাড়া উপজেলায় ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার ছিল ৩৮৪টি। এর মধ্যে প্রথম দফায় ৩৮, দ্বিতীয় দফায় ১৫০ এবং তৃতীয় দফায় ১৯৬টি পরিবারকে ঘর ও ভূমি দেওয়া হয়। বাঁশখালী উপজেলায় ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার ছিল ৩৬২টি। এর মধ্যে প্রথম দফায় ৪৭, দ্বিতীয় দফায় ১৪, তৃতীয় দফায় ১৩৫ এবং চতুর্থ দফায় ১২০টি পরিবারকে ঘর ও ভূমি দেওয়া হয়। রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার ছিল ৩৮২টি। এর মধ্যে প্রথম দফায় ১১৫, দ্বিতীয় দফায় ৫০, তৃতীয় দফায় ৭০ এবং চতুর্থ দফায় ১৪৭টি পরিবারকে ঘর ও ভূমি দেওয়া হয়। রাউজান উপজেলায় ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার ছিল ৮৩৯টি। এর মধ্যে প্রথম দফায় ২৪০, দ্বিতীয় দফায় ২৪৮, তৃতীয় দফায় ১২৮ এবং চতুর্থ দফায় ২২৩টি পরিবারকে ঘর ও ভূমি দেওয়া হয়। হাটহাজারী উপজেলায় ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার ছিল ২৮০টি। এর মধ্যে প্রথম দফায় ১৫, দ্বিতীয় দফায় ১০, তৃতীয় দফায় ১৩৫ এবং চতুর্থ দফায় ১২০টি পরিবারকে ঘর ও ভূমি দেওয়া হয়। ফটিকছড়ি উপজেলায় ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার ছিল ১ হাজার ২৯০টি। তিন দফায় ৬০০, ৪৯০ ও ২০০ পরিবারকে ঘর ও ভূমি দেওয়া হয়।  

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর