আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক নীতিমালা সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যমকর্মী ও অন্য অংশীজনদের মতামত এবং আন্তর্জাতিক চর্চার আলোকে নীতিমালাটি সংশোধন করার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল এক বিবৃতিতে টিআইবি বলছে, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভিসা জটিলতার কারণে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বল্প সংখ্যক উপস্থিতি ও বিতর্কিত ভূমিকা নির্বাচন-প্রক্রিয়াকে কলুষিত করেছে। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিদ্যমান নীতিমালাটি অবশ্যই সংশোধন করতে হবে, কারণ একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অবাধ উপস্থিতি ও স্বাধীনভাবে বিচরণ করার সুযোগ অপরিহার্য। এক্ষেত্রে শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতামত-নির্ভর সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিধিনিষেধমূলক নীতিমালা প্রণীত হলে একদিকে যেমন নির্বাচন কমিশনের চলমান আস্থার সংকট আরও গভীরতর হবে, অন্যদিকে তা বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আবারও নিরুৎসাহিত করবে।
নীতিমালাটি যুগোপযোগী করার ক্ষেত্রে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অবাধ উপস্থিতিকে লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ড বা সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নিশ্চিতের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বাচন সুুষ্ঠু করার দায় এককভাবে যেমন নির্বাচন কমিশনের নয়, তেমনি একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করাও যে কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব ও বাধ্যবাধকতা, তা-ও ভুলে গেলে চলবে না। তাই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দল-নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও অন্য অংশীজনদের মতামত এবং এক্ষেত্রে বিগত দিনে বাংলাদেশের ইতিবাচক ও নেতিবাচক অভিজ্ঞতাসহ আন্তর্জাতিক চর্চার আলোকে নীতিমালাটি ঢেলে সাজাতে হবে।
২০১৮ সালে তৎকালীন নির্বাচন কমিশন সচিব ‘পর্যবেক্ষকদের ভোট কেন্দ্রে মূর্তির মতো থাকতে হবে’ বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, এই নীতিমালাটি সংশোধনের ক্ষেত্রে সেই একই মানসিকতার প্রতিফলন যেন না ঘটে, সেদিকটা বর্তমান কমিশন ও সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষকে সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করার আহ্বান জানায় টিআইবি।