সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সংঘাত এড়াতে সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান ইসলামী আন্দোলনের

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

অনিবার্য সংঘাত এড়াতে সরকারকে দ্রুত পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ। তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ক্ষমতাসীনদের অধীনে হবে না, হতে দেওয়া হবে না। সরকার সসম্মানে পদত্যাগ না করলে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। গতকাল খুলনা মহানগরের শিববাড়ি মোড়ে ইসলামী আন্দোলনের খুলনা মহানগর ও জেলা কমিটি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ, নির্বাচন কমিশন বাতিল, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (পিআর) পদ্ধতি প্রবর্তন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ, সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের জেলা সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আবদুল্লাহ ইমরান। বিশেষ অতিথি ছিলেন নায়েবে আমির ও নগর সভাপতি হাফেজ মাওলানা আবদুল আউয়াল, দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মদ শোয়াইব হোসেন। খুলনা নগর সেক্রেটারি মুফতি ইমরান হুসাইন ও জেলা সেক্রেটারি হাফেজ আসাদুল্লাহ গালিবের সঞ্চালনায় সমাবেশে নগর ও জেলার নেতারাও বক্তব্য রাখেন।

মাওলানা ইউনুস আহমাদ আরও বলেন, বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ দেশকে নরকে পরিণত করেছে। কোথাও শান্তি নেই, নিরাপত্তা নেই। গুম-খুনের আতঙ্কে মানুষ উদ্বিগ্ন-উৎকণ্ঠিত। সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা সরাসরি সিন্ডিকেটে জড়িত। সিন্ডিকেটের কাছে সাধারণ মেহনতি মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। তাই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

 বিবৃতিতে বলা হয়, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্বার্থরক্ষার্থে দেওয়া বিবৃতিটিতে বাংলাদেশে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ওপর আক্রমণ চলছে বলে যে দাবি করা হয়েছে তা অমূলক ও ভিত্তিহীন।

বিবৃতিতে ড. ইউনূসের ব্যাপারে চিঠিদাতাদের অবস্থান ‘পক্ষপাতমূলক’ বলে উল্লেখ করা হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদাহরণ টেনে এতে বলা হয়, অতি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্পও গ্রেফতার হয়ে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। এ থেকে প্রতীয়মান হয়, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। বিবৃতিদাতারাও নিজ নিজ দেশের আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও নীতিনিষ্ঠ নাগরিক হিসেবে পরিচিত। অথচ বাংলাদেশের বিষয়ে তাদের অবস্থান আইনের শাসন, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের ব্যাপারে বৈপরীত্য নির্দেশ করে। তাদের ওই চিঠির মধ্য দিয়ে চলমান বিচারিক কার্যক্রম প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে এবং ন্যায়বিচারকে ব্যাহত করবে বলেও বিবৃতিতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা বিচারাধীন। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে ৬০ বছরে অবসরে যাওয়ার আইন অমান্য করে ৭০ বছর বয়সেও উক্ত পদ ছাড়তে সম্মত ছিলেন না। এ সংক্রান্ত মামলায় তিনি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আইনি লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার পরে গ্রামীণ ব্যাংকের পদ ফিরে পেতে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রভাবশালী দেশে লবিং করেছেন। এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকি, দাতা তহবিলের অর্থ বেআইনিভাবে হস্তান্তর, শ্রম আইন লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা ধরনের অভিযোগ আছে। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা কর ফাঁকির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে এবং তিনি আদালতের রায় মেনে নিয়ে ধার্যকৃত কর পরিশোধ করেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর