শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

এক সড়কে যুক্ত ২৩ পর্যটন কেন্দ্র

পর্যটন বিকাশের পাশাপাশি সিলেটে তৈরি হবে কর্মসংস্থান ইতিবাচক প্রভাব পড়বে স্থানীয় অর্থনীতিতে

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

এক সড়কে যুক্ত হবে সিলেটের ২৩ পর্যটন কেন্দ্র। দুই দিনে ঘুরে দেখা যাবে সব স্থান। এতে কমবে পর্যটকদের ভোগান্তি, ভ্রমণ ব্যয় ও সময়। সড়কটির কাজ শেষ হলে সিলেটের পর্যটন সম্ভাবনার বিকাশের পাশাপাশি তৈরি হবে কর্মসংস্থান। স্থানীয় আর্থসামাজিক অবস্থায়ও পড়বে ইতিবাচক প্রভাব। সড়কটি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ প্রাথমিক সমীক্ষা সম্পন্ন করেছে। সড়কটির কাজ সওজ না এলজিইডি করবে, তা নির্ধারণ হবে আগামী সমন্বয় সভায়।

সিলেটের প্রায় সবকটি পর্যটন কেন্দ্রের অবস্থান সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলায়। কিন্তু অনুন্নত যোগাযোগব্যবস্থা ও সংযোগসড়ক না থাকায় একটি পর্যটন কেন্দ্র থেকে অন্যটিতে যেতে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এ ছাড়া সময় ও ব্যয় উভয়টি বেড়ে যায়। উন্নত যোগাযোগব্যবস্থার অভাবে সম্ভাবনাময় অনেক পর্যটন কেন্দ্রে পৌঁছাতেই পারেন না পর্যটকরা। ফলে সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পুরোটা তুলে ধরা সম্ভব হচ্ছে না। শুধু যোগাযোগব্যবস্থার কারণে অনেক পর্যটন কেন্দ্র রয়ে গেছে পর্যটকদের অগোচরে। সিলেটের পর্যটন বিকাশে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে পর্যটন সম্ভাবনার বিষয়টি তুলে ধরেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মুজিবুর রহমান। সিলেটের পর্যটনকে আরও আকর্ষণীয় ও সহজসাধ্য করতে তিনি সিলেট-জাফলং-সাদাপাথর-ওসমানী বিমানবন্দর পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ করা হলে অনেক বেসরকারি বিনিয়োগকারী পর্যটন খাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত হবেন বলে প্রস্তাব করেন। জেলা প্রশাসকের ওই প্রস্তাবটি পরীক্ষানিরীক্ষা করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশনার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সমীক্ষার কাজ শুরু করে। সূত্র জানান, প্রস্তাবিত সিলেট-জাফলং-সাদাপাথর-ওসমানী বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কের মধ্যে ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সাদাপাথর পর্যন্ত উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা রয়েছে। বঙ্গবন্ধু মহাসড়ক হয়েই ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সাদাপাথর পর্যন্ত যাতায়াত করা যায়। সিলেট শহর থেকে জাফলং পর্যন্তও রয়েছে ভালো যোগাযোগব্যবস্থা। তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলে যোগাযোগব্যবস্থা আরও উন্নত হবে। কেবল জাফলং থেকে সাদাপাথর পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করা গেলে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব। সওজসূত্র জানিয়েছেন, এজন্য প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ ও প্রশস্ত করতে হবে। পর্যটনসংশ্লিষ্টরা জানান, এখন সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকরা সাদাপাথর বেড়াতে গেলে ফেরার পথে কেবল রাতারগুল যেতে পারেন। আর জাফলং বেড়াতে গেলে লালাখালসহ আরও দু-একটি স্থান ঘোরার সুযোগ পান। উন্নত সড়ক যোগাযোগ না থাকায় এক দিনে দু-তিনটির বেশি পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখা সম্ভব হয় না। জেলা প্রশাসকের প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই সড়কটি নির্মিত হলে পর্যটকরা মাত্র দুই দিনে হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার, হযরত শাহপরান (রহ.) মাজার, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, লাক্কাতুড়া চা-বাগান, বাইশটিলা, খাদিম রিসোর্ট, সাদাপাথর, বিছানাকান্দি, উতমাছড়া, দমদমছড়া, লক্ষণছড়া, পান্থুমাই, খাসিকম, জাফলং, তামাবিল, নলিউরি ফলস, ডিবিরহাওর, জৈন্তাপুর, লালাখাল ও রাতারগুল ঘুরে দেখতে পারবেন।

এ প্রসঙ্গে সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর সড়কটি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এ সড়কের কিছু অংশ এলজিইডির আওতাধীন। এখন কাজ সওজ না এলজিইডি করবে তা আগামী সমন্বয় সভায় নির্ধারণ করা হবে। এ ছাড়া প্রস্তাবিত সড়কের ১৫০ মিটারের মধ্যে কী কী স্থাপনা এবং নদী-নালা-খাল ও কালভার্ট কী রকম আছে তারও সমীক্ষা চালানো হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর