মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মশা তাড়ানোর কয়েলেও অবৈধ সিন্ডিকেট

এক বছরে অবৈধ সাত কয়েল কারখানা সিলগালা

নজরুল মৃধা, রংপুর

রংপুর অঞ্চলে সাধারণ মানুষ মশার কয়েল ব্যবহার করছেন যাতে মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগ না হয়। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মশার কয়েলের চাহিদা  বেড়েছে কয়েকগুণ। এই মশার কয়েলকে ঘিরে গড়ে উঠেছে অবৈধ কারখানা ও সিন্ডিকেট। ওইসব কারখানার উৎপাদিত নি¤œমান এবং ভেজাল কয়েল বাজারে সরবরাহ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এতে মশার অত্যাচার কমাতো দূরের কথা দুর্ভোগ আরও বাড়ছে। বিএসটিআই রংপুর বিভাগীয় কার্যালয় গত এক বছরে ৭টি  নকল কয়েল তৈরির কারখানা সিলগালা করলেও থেমে নেই নকল কয়েলের রমরমা ব্যবসা। বিভাগের ৮ জেলায় কমপক্ষে ১০-১৫টি অবৈধ প্রতিষ্ঠানে নি¤œমানের কয়েল তৈরি করে বাজারজাত করা হচ্ছে। বিএসটিআই সূত্রে জানা গেছে, রংপুর বিভাগে লাইসেন্সপ্রাপ্ত তিনটি মশার কয়েল কারখানা রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- রংপুরের ভরসা কয়েল, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের নিউটেক কয়েল এবং দিনাজপুরের সিমফন। কিন্তু এর বাইরে অবৈধভাবে বিভিন্ন কোম্পানির নামে মশার কয়েল উৎপাদন ও বিক্রয়-বিতরণ করা হচ্ছে। গত এক বছরে এমন সাতটি কয়েল কারখানা সিলগালাসহ ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বিএসটিআই। সিলগালা কারখানাগুলো হলো- রংপুরের হারাগাছের কাজল কেমিক্যাল, সাগর এন্টারপ্রাইজ, নিশাত কেমিক্যাল, সোনালী কেমিক্যাল ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের আল আরাফ কনজুমার্স, মেসার্স ফারকো কেমিক্যাল ও মেসার্স হ্যাভেন ইন্টারন্যাশনাল। জানা গেছে, ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কয়েলের চাহিদাও বেড়ে যাওয়ায় অনেকের নিত্যদিনের খরচের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে মশার কয়েল।

সেই কয়েলেও ভেজাল। বর্তমানে প্রতি প্যাকেট (১০ পিস) ৫০ থেকে ১০০ টাকারও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে বিক্রি হওয়া কয়েল নিয়ে ভোক্তার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, মশার কয়েল ব্যবহার করে মশার অত্যাচার থেকে বাঁচা যাচ্ছে না। কয়েলের কার্যকারিতা নেই। কয়েল ক্রয় করে তারা ঠকছেন।

এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশের ঢাকাসহ অন্যান্য স্থানের মতো রংপুরও ডেঙ্গুর বিস্তার বেড়েছে। বিশেষ করে রংপুর সিটি করপোরেশনের পুরনো ১৫টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুর হটস্পট। গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগে ৫২ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। বিভাগে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৪৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৮ জন। ৩ হাজার ৯০১ জন সুস্থ হলেও এখনো বিভিন্ন হাসপাতালে ১২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বিএসটিআইর উপ-পরিচালক (মেট্রোলজি) ও রংপুর বিভাগীয় অফিস প্রধান মফিজ উদ্দিন আহমাদ জানান, অবৈধভাবে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মশার কয়েল তৈরি হচ্ছে। আমরা অভিযান চালিয়ে গত এক বছরে ৭টি কারখানা সিলগালা করে দিয়েছি। তবে যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি কারখানা খুলে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর