শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

এবার খরচ বাড়ছে রেলযাত্রায়

১০০ মিটারের ঊর্ধ্বে সব সেতু ও ভায়াডাক্ট পন্টেজ চার্জ আরোপ হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

এবার খরচ বাড়ছে রেলযাত্রায়

অবকাঠামো নির্মাণে অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে ট্রেনে পরিবহন ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে। পদ্মা সেতুর পাশাপাশি আগামীতে রেলওয়ের ১০০ মিটারের ঊর্ধ্বে সব সেতু ও ভায়াডাক্ট পন্টেজ চার্জ আরোপ করবে রেল কর্তৃপক্ষ। ফলে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে রেলের যাত্রী ও পণ্য পরিবহন ভাড়া বাড়বে। তবে পদ্মা সেতুতে ট্রেন চালুর পর ভাড়া বাড়ায় সমালোচনার মুখে পড়ে রেল কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপরে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘শুরু থেকেই রেলওয়ের নিয়মে সেতুর জন্য পন্টেজ চার্জসহ ভাড়া আদায়ের বিধান রয়েছে। যদিও সীমিত কয়েকটি সেতু থেকেই রেলওয়ে পন্টেজ চার্জ আদায় করে। যৌক্তিক পন্টেজ চার্জ নির্ধারণের মাধ্যমে রেলের আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে রেলওয়ে। আগামীতে বিভিন্ন সেতুর মাধ্যমে পন্টেজ চার্জ আদায় হলে রেলওয়ের আয় বাড়ানো সম্ভব হবে।’

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ব্রিটিশ আমলে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের নিয়মানুযায়ী সেতুতে এক্সট্রা ডিসটেন্স পন্টেজ চার্জ আরোপের নিয়ম রয়েছে। তবে রেলওয়ে শুধু হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, যমুনা সেতু, ভৈরব ও ব্রহ্মপুত্র সেতু থেকে বাড়তি পন্টেজ চার্জ ভাড়ার সঙ্গে আদায় করত। সর্বশেষ পদ্মা সেতুতে ট্রেন সার্ভিস চালুর সময় ভায়াডাক্টের পন্টেজ চার্জ আরোপ করা হয়। এতে পদ্মা সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার পন্টেজ দূরত্ব হিসেবে ১৫৪ কিলোমিটার এবং গেন্ডারিয়া থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার ফ্লাইওভার পন্টেজ দূরত্ব হিসেবে ১১৫ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। রেলওয়ের কিলোমিটারপ্রতি নিয়মিত ভাড়ার সঙ্গে বাড়তি পন্টেজ দূরত্ব যুক্ত করে ট্রেনের যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০ বছর পর ২০১২ সালের অক্টোবরে ভাড়া বাড়ায় রেলওয়ে। ওই সময় সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১১০ শতাংশ পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় রেলের ভাড়া বাড়ানো হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে রেলের যাত্রী ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল ৭-৯ শতাংশ। এরপর কয়েক দফায় রেলওয়ে ভাড়া বাড়ানোর উদ্যোগ নিলেও রাজনৈতিক বিবেচনায় তা বাড়ানো হয়নি। ফলে দেশের সড়কপথের বিভিন্ন যানবাহনের ভাড়ার সঙ্গে রেলের ভাড়া কম হওয়ায় ট্রেনে যাত্রী বাড়লেও রাজস্ব বাড়েনি রাষ্ট্রায়ত্ত গণপরিবহন সংস্থাটির। আয়ের বিপরীতে ব্যয় বেশি হওয়ায় ধারাবাহিক লোকসানে থাকলেও রাজনৈতিক বিবেচনায় রেলপথের ভাড়া না বাড়ানোয় লোকসান থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না। এ জন্য রেলওয়ের বিভিন্ন সেতুতে পন্টেজ চার্জ আরোপের মাধ্যমে আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে রেলওয়ের বিপণন বিভাগ। রেলের বাণিজ্যিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সবচেয়ে ছোট ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে ভৈরব সেতুতে রেলওয়ে পন্টেজ চার্জসহ ভাড়া আদায় করছে। এ সেতুতে পন্টেজ চার্জ ধরা হয়েছে ২৩ কিলোমিটার। অর্থাৎ ১ কিলোমিটার সেতুর জন্য ২৩ কিলোমিটারের ভাড়া দেন যাত্রীরা। রেলওয়ের বর্তমান নিয়মে ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুর জন্যও বাড়তি পন্টেজ চার্জসহ ভাড়া আদায় করা হবে। রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেলের কিলোমিটারপ্রতি নন-এসি টিকিটের ভাড়া ১ টাকা ১৭ পয়সা। অন্যদিকে এসি টিকিটের কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া ১ টাকা ৯৫ পয়সা। প্রথম শ্রেণি ও এসি টিকিটের ক্ষেত্রে যাত্রীরা ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট পরিশোধ করে। বর্তমানে ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুতে পন্টেজ চার্জ আরোপ করা হলে সার্বিক ভাড়া না বাড়িয়ে আয় সমন্বয় করা সম্ভব।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর