বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অবৈধ অঢেল সম্পদ কাস্টমসের সাবেক কমিশনারের

নিজস্ব প্রতিবেদক

কাস্টমসের সাবেক কমিশনার শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অবৈধ অঢেল সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মাহবুবা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ১২ নভেম্বর শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক দেবব্রত মন্ডলের এক চিঠিতে এই চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গতকাল দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম এসব জানিয়েছেন। এর আগে দুদকের উপপরিচালক নূর-ই-আলম দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২২ মার্চ শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে এবং পরদিন ২৩ মার্চ তার স্ত্রী মাহবুবা ইসলামের বিরুদ্ধে মহানগর বিশেষ জজ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। দুদক সূত্র বলছে, কাস্টমস কর্মকর্তার জ্ঞাত বহির্ভূত আয় ৫ কোটি ২১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৩৪ টাকা। নিজের নামে সোয়া কোটি টাকার সম্পদ। স্ত্রীর নামে অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ৪ কোটি ৪ লাখ ৮১ হাজার ২৬৯ টাকা।

আর ছেলের নামে কিনেছেন ৮৬৮.৫ শতাংশ জমি। ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, সিলেটের কমিশনার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন শফিকুল ইসলাম। সে সময় থেকে তার বিরুদ্ধে তদন্তে নামে দুদক। পরে তিনি কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপিল) কমিশনারেট, ঢাকা-১ এর কমিশনার হন।

দুদকের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাস্টমস কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের জ্ঞাতবহির্ভূত আয় ৫ কোটি ২১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৩৪ টাকা। এই সম্পদের মধ্যে শফিকুল স্থাবর সম্পদ ৩৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ঘোষণা দেন। কিন্তু তদন্তে পাওয়া যায় ৫২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। ১৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন রাখেন তিনি। এ ছাড়া ৯৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৫৭ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তদন্তে ১ কোটি ৫১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭২ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মিলে। এতে শফিকুলের সম্পদের ব্যবধান দাঁড়ায় ৭১ লাখ ৮৪ হাজার ২১৫ টাকা। তদন্তে ৫৬ লাখ ৩৩ হাজার ২১৫ টাকার সম্পদ গোপনের তথ্য মিলে। নিজ ও সন্তানদের নামে ৫২ লাখ ৯৬ হাজার টাকার স্থাবর ও ১ কোটি ৫১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭২ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ২ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৬৭২ টাকার সম্পদ অর্জন করেন। পারিবারিক ব্যয়সহ অন্যান্য খাতে ৩২ লাখ ৭৩ হাজার ৫১৮ টাকা ব্যয় করেছেন। এটা বাদ দিয়েও জ্ঞাতবহির্ভূত আয় দাঁড়ায় ২ কোটি ৩৭ লাখ ১৬ হাজার ১৯০ টাকা। কাস্টমস কর্মকর্তার নিজ নামে বৈধ আয়ের উৎস মিলে ১ কোটি ২০ লাখ ৩০ হাজার ১২৫ টাকা। এর বাইরে ১ কোটি ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬৫ টাকা মূল্যের সম্পদের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন। আর ছেলের নামে কেনা ৮৬৮.৫ শতাংশ জমির বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। এ ছাড়া তার স্ত্রী মাহবুবা ইসলামের অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ৪ কোটি ৪ লাখ ৮১ হাজার ২৬৯ টাকার অবৈধ সম্পদ জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবেই অর্জন করেন।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর